জায়গা মেলেনি স্বাস্থ্য কমম্পেক্সে, রাস্তায় সন্তান প্রসব!
রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স চত্বরে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয়া গর্ভবতী স্বাস্থ্য কমম্পেক্স চত্বরের রাস্তায় সন্তান প্রসব করেছেন। ছেলে সন্তান প্রসব করেছে রিতু আক্তার নামের ওই গর্ভবতী নারী। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে। গর্ভবতী নারীর স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলাকে দায়ী করেছেন।
এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে সন্তান জন্ম দেয়ার একটি ছবি বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের অবহেলা রয়েছে বলে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হলে বেগতিক দেখে ওই মা ও নবজাতককে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয় ডাক্তাররা।
জানা গেছে, কাউনিয়ার পার্শ্ববর্তী উপজেলা পীরগাছার অন্নদানগর চালনিরপাড় গ্রামের সাগর মিয়ার স্ত্রী রিতু আক্তার (২০) শুক্রবার দুপুরে প্রসব ব্যথা নিয়ে পরিবারের লোক জন সহ কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসক ও নার্সরা ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর গর্ভের সন্তানের অবস্থান উল্টো দিকে বলে স্বজনদের জানায় এবং দ্রুত তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। সেখান থেকে বের হয়ে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করার সময় কমপ্লেক্স চত্বরে সন্তান প্রসব করেন রিতু আক্তার নামের গর্ভবতী মা।
রোগীর স্বজনরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে ওই নারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রাস্তার ধারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে সেখানে ভর্তি করে নেন। বর্তমানে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই মা ও নবজাতকের চিকিৎসা চালু আছে।
কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাহেদ সাব্বির আহমেদ বলেন, নারীর গর্ভে সন্তানের অবস্থা বেগতিক ছিল। তারা বাড়িতে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পরে হাসপাতালে আসে।আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গর্ভবতী মায়ের মঙ্গলের স্বার্থে রংপুরে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছি। এরই মধ্যে হাসপাতাল চত্বরে সন্তান প্রসবের ঘটনাটি ঘটেছে। বর্তমানে তারা দুই জনেই ভালো আছে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স ঠিক মতো রোগীকে দেখেননি। এই রোগীর ডেলিভারী এখানে হবে না। একারণে তারা রোগীকে নিয়ে রংপুরে নিয়ে যেতে হবেন। বাধ্য হয়ে রোগীকে রংপুর নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে থাকার সময়ে চত্ত্বরেই বাচ্চা প্রসব হয়। হাসপাতালে আসা অনেকেই বলেন, চিকিৎসক ও নার্সরা চেষ্টা করলে রাস্তাতয় সন্তানের জন্মো হতোনা।এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলা রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার কর্মকর্তা ডাঃ মীর হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনার পরই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ওই মা ও শিশুকে বর্তমানে মহিলা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তারা দুই জনই সুস্থ আছেন। এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলা নয় অদক্ষতাকে দায়ী করছেন তিনি। কারো কোন গাফিলতা থাকলে সে বিষয়ে আইনত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান। প্রসঙ্গত, এখানে গর্ভবতী মহিলাদের পরীক্ষারার জন্য আল্টাসনোগ্রাম মেসিনও নেই। চিকিৎসা চলছে শুধু অনুমানের উপর। এ চিকিৎসা সেবাতেই এখানকার মানুষ চলছে।
এএজেড