দেবী আবাহনে ব্যস্ত পূজারিরা
আশ্বিন মাস। দেবী দুর্গার নাইওরের সময়। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে মর্ত্যলোকে আসার সময় হয়ে গেছে তার। ঢাকে বাড়ি পড়ল বলে। দেবীকে আবাহনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজারিরাও। দেবীর প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত কারিগর ও মৃৎশিল্পীরা।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাদামাটি, খড়, কাঠ, বাঁশের কাজ। এবার জেলায় ৪৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি চলছে জোরেসোরে। মাটি আর হাতের ছোঁয়ায় কাঠামো তৈরির কাজ চলছে। সনাতন সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে বেড়েছে ব্যস্ততা। কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে কেনাকাটায়, কেউবা নাড়ুমোয়া তৈরি, বাড়িঘরের সাজসজ্জায়।
জানা যায়, জেলায় শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীদের হাতের কারুকাজে প্রতিমার কাঠামো সেজে উঠেছে। প্রতিমার কারিগররা আট থেকে ১০টি করে প্রতিমা নিয়ে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। আর মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে নানা আয়োজন। আর কয়েকদিন পর রঙের আঁচড়ে সেজে উঠবে প্রতিমাগুলো। শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে উৎসবের প্রতি ঝুঁকে পড়তে দেখা যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।
সাজসজ্জা করতে মণ্ডপে ডেকোরেশনের কাজ সবখানে শুরু না হলেও আয়োজন চলছে মাপজোকের। ভক্তদের প্রেবেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কারুকাজে বিরাট গেট তৈরি করা হচ্ছে। বাঁশ, কাঠ, কাপড় দিয়ে মণ্ডপের শোভা বাড়ানোর কাজ করছে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ।
শহরের বিপণিবিতানগুলোতে পূজার কেনাকাটা করতে ভিড় বেড়েছে আগের থেকে দিগুণ। পূজার জন্য নতুন জামাকাপড়। পাদুকা থেকে প্রসাধনী কিনছেন ক্রেতারা। আবার কাটা কাপড়, শাড়ি, নারীদের সাজের প্রয়োজনীয় গহণা, তৈরি পোশাক, টেইলার্স, নতুন কাপড়ের দোকানেও ভিড় বেড়েছে। তবে এবার কেনাকাটায় নারীদের প্রথম পছন্দ শাড়ি। আর ছেলেরা ধুতির সঙ্গে রং মিলিয়ে নিচ্ছেন পাঞ্জাবি। আর তরুণরা জিন্স ও টি-শার্টে ঝুঁকেছেন। তরুণীরা মজেছেন ভারতীয় বিভিন্ন রঙের থ্রি পিসে। আর শিশুদের তৈরি পোশাক বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে পূজা উপলক্ষে অনেকেই ছুটছে স্বর্ণের দোকানেও।
ঠাকুরগাঁও পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবছর ৪৭২টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সে হিসাবে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।
ঠাকুরগাঁও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুনাংশ দত্ত টিটো ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, এবারও প্রতিটা মন্দিরে আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক থাকবে। এর পাশাপাশি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি মন্দিরে কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাসহ সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে কম আলোকসজ্জা ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেলার ৫টি উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছ। আয়োজক কমিটির পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে টহল টিমও সতর্ক হয়ে মাঠে কাজ করবে।
এসএন