চরে আধিপত্য বিস্তারে তিন খুন, গ্রেপ্তার ২
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর চর বাগডোহরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিন খুনের ঘটনায় সাথে জড়িত ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি পুলিশ। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর কেরানীপাড়াস্থ সিআইডি রংপুর জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার আতাউর রহমান সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল জেলার গঙ্গাচড়ার তিস্তা নদীর চর বাগডোহরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলামকে হত্যা করে।
এরপর সাইফুল তার আপন চাচাতো ভাই প্যারালাইজড রোগী রিয়াজুল ইসলামকে হত্যা করে ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করে। রিয়াজুল হত্যাকাণ্ডটি তার নাতনী মোনালিসা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যার চেষ্টা চালায় সাইফুল। প্রাণের ভয়ে শিশু মোনালিসাকে নিয়ে তার পিতা-মাতা গ্রাম ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে দুই মাস আত্মগোপনে থেকে বাড়ি ফিরে আসে মোনালিসার পরিবার।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের ৯ জুন দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে একা পেয়ে মোনালিসাকে হত্যা করে সাইফুল ও তার সহযোগিরা। এ ঘটনায় ২০২২সালের ৪ আগস্ট গঙ্গাচড়া থানায় মামলা হলে তদন্তভার দেয়া হয় সিআইডি পুলিশ কে। সিআইডির সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে বাগডোহরা থেকে আতিয়ার রহমানের স্ত্রী মোতাহারা বেগম ও মোনালিসার মামী আজিনুরের স্ত্রী ময়না বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান করে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিআইডি ময়না ও মোতাহারাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে একদিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করলে জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
সিআইডি রংপুর জোনের বিশেষ পুলিশ সুপার আতাউর রহমান বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল তার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য আজিজুলকে হত্যা করে। ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য সে তার আপন চাচাতো ভাই রিয়াজুলকে হত্যা করে। সর্বশেষ রিয়াজুলের নাতনীকে হত্যা করে ঘরের গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশু মোনালিসার (১২) মুখে রক্ত দেখতে পাই।
লাশটি উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোসহ ময়না তদন্ত করা হয়। ময়না তদন্তে মোনালিসাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমান পাওয়া যায়। সিআইডি এ তিনটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে। অন্যান্য আসামীরা গ্রেপ্তার হলেও মূল আসামী সাইফুল এখনও পলাতক রয়েছে। সে বিভিন্ন মানুষের সীমকার্ড ব্যবহার করছে এবং ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করছে। আমরা আশাকরছি দ্রুত তাকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হব।
এএজেড