কৃষি অফিসের সেই সাইনবোর্ডটি রাতের আঁধারে উধাও
গত শনিবার ঠাকুরগাঁও রুহিয়া থানা বিএনপির কার্যালয়টি ভাঙচুরের পর আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার চার দিনের মাথায় সেখানে কৃষি বিভাগের একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে সাইনবোর্ডটি কে বা কারা তুলে নিয়ে গেছে।
জান যায়, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (৩সেপ্টেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আহ্বান করে রুহিয়া থানা বিএনপি। অন্যদিকে একই দিন বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় রুহিয়া থানা মহিলা আওয়ামী লীগ। দুই পক্ষের কর্মসূচিকে ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
এতে উভয় পক্ষের প্রায় ২৫ নেতা-কর্মী আহত হন আর পাঁচটি মোরসাইকেল আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়াসহ দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে রুহিয়া থানা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেদিন থেকে বিএনপির কার্যালয়টি সেভাবেই পড়ে ছিল।
গত বুধবার (৭সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয় লোকজন থানা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো একটি সাইনবোর্ড দেখতে পান। সেখানে লেখা হয়েছে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও। সাইনবোর্ডটি সারা রাত সেখানে থাকলেও আজ সেটি গায়েব হয়ে যায়।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুর এর বাবা আবদুল জব্বার চৌধুরী ১৯৯৬ সালে ৫৩ শতক জমি বিএনপিকে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলেন। সেই থেকে বিএনপি ওই জায়গা ব্যবহার করে আসছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি কার্যালয়ে কৃষি অফিসের সাইনবোর্ড লাগাল কারা?
বিএনপি কার্যালয়ের সামনের দোকানদাররা জানান, গতকাল রাতেও সাইনবোর্ডটি দেখেছি আমি। আজ সকালে দেখি সেটি নেই। রাতের আঁধারে যেভাবে সাইনবোর্ডটি এসেছিল, ঠিক সেভাবেই গায়েব হয়ে গেছে। গভীর রাতেই এই সাইনবোর্ডটি কে বা কারা তুলে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রুহিয়ায় আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে গতকাল সকালে দেখি কার্যালয়ের ধ্বংস স্তুপের উপরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রুহিয়া শাখার একটি সাইনবোর্ড। আমরা কৃষি বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা আমাদের নিশ্চিত করেছিল, সাইনবোর্ডটি কৃষি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে লাগানো হয়নি। এ থেকে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর বিএনপি কার্যালয়ের জায়গাটি দখলে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে আওয়ামী লীগের লোকজন সেখানে কৃষি কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়েছিল। আজ তারাই আবার সেটা তুলে নিয়ে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে রুহিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ে কৃষি বিভাগের সাইনবোর্ড ঝোলাননি। সুতরাং তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো: আব্দুল আজিজ ঢাকাপ্রকাশ-কে গতকাল বলেছিলেন, সাইনবোর্ডের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিএনপি কার্যালয়ে আমাদের সাইনবোর্ড লাগানোর কোন সুযোগ নেই। সেখানে কে বা কারা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে, তা বলতে পারছি না। সেই সাইনবোর্ড কৃষি বিভাগ থেকে যে ঝোলানো হয়নি, তা নিশ্চিত করছি।
আজ বৃহস্পতিবার (৮সেপ্টেম্বর) ড. মো: আব্দুল আজিজ বলেন, কৃষি কার্যালয়ের সাইনবোর্ডটি ঝোলানোর কথা শুনে দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের বলেছি কেউ সাইনবোর্ডটির ব্যাপারে বলতে পারেনি। এখন শুনলাম সেই সাইনবোর্ডটি আর নেই।
এএজেড