বুড়িমারী স্থলবন্দরের ১৬ কর্মকর্তার একযোগে বদলি
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ১৮ জনের মধ্যে ১৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার বদলিকৃতদের নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৪টায় বুড়িমারী স্থলবন্দরের প্রধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ঢাকার আগারগাঁও কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) বিভাগের ডি এম আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি বদলির আদেশের চিঠি গত ২৫ আগস্ট একটি জারি করা হয়। এতে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে বদলি করে সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন, ট্রাফিক পরিদর্শক জাহীদুর রহমান, হিসাবরক্ষক আদনান খালিদ বসুনিয়া ও ক্যাশিয়ার ভ্রমর কুমার সরকারকে কুড়িগ্রাম জেলার সোনাহাট স্থলবন্দরে, ট্রাফিক পরিদর্শক সালাউদ্দিনকে ফেনী জেলার পরশুরাম বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, ট্রাফিক পরিদর্শক শাহিন মাহমুদ ও আমিনুল হককে ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরে, ওয়্যার হাউজ সুপারিনটেনডেন্ট মানিকুর রহমানকে ফেনী জেলার বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, একই পদের মিনহাজ উদ্দিন, হারুন অর রশিদ, আবুল বাসার ও কম্পিউটার অপারেটর হাসমত উল্লাহকে যশোর জেলার বেনাপোল স্থলবন্দরে, ওয়্যার হাউজ সুপারিনটেনডেন্ট মাছুদ রানাকে দিনাজপুর জেলার হিলি স্থলবন্দরে, একই পদের ফিদা হাসানকে পঞ্চগড় জেলার বেনাপোল ও এস.এম মাসুম বিল্লাহকে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় স্থলবন্দরে এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজাকে শেরপুর জেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে বদলিকৃতদের কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে। একই তারিখে উল্লেখিত স্থলবন্দরগুলো থেকে পদায়ন করা ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বুড়িমারী স্থলবন্দরে যোগ দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির একটি লিখিত অভিযোগ চলতি বছর দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। এতে ভারতীয় ট্রাক থেকে ওজন স্টেশনে অবৈধভাবে টাকা আদায়, খাদ্যশস্যের ট্রাক থেকে টাকা নেওয়া, বিল শাখায় জালিয়াতি করে সরকারি রাজস্ব আত্নসাৎ, আগত পণ্যবাহী গাড়ি ও ওজনের গাড়ির গরমিল, রাত্রিকালীন ট্রাক চার্জ জমা না দিয়ে আত্নসাৎ, ১-২ দিনের ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে না থাকা, ভুয়া চালান করা, ওজন স্কেলে পণ্যের ওজন কম দেখিয়ে টাকা আদায়, বহিরাগতদের নিয়ে কর্মস্থলে আড্ডা দেওয়াসহ নানা অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব হরিলুট ও লুটতরাজ করার উল্লেখ করা হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীরা জানান, যারা বদলি হয়েছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে বুড়িমারী স্থলবন্দরে চাকরি করে আসছেন। বন্দরের কিছু ব্যবসায়ীকে বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের বদলি হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে আমিসহ ১৬ জনকে বদলি করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থলবন্দর হচ্ছে তাই একযোগে এতজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমাদের নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে।
এসজি