কুড়িগ্রামে টানা বৃষ্টিতে আমন চাষিদের স্বস্তি
কুড়িগ্রামে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে অঞ্চলের আমন চাষিদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। টানা বৃষ্টিতে জেলার ৯ উপজেলার আমন ক্ষেতের জমিগুলো ভরে যাওয়ায় প্রাণ ফিরেছে। আর স্বস্তি মিলেছে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক-কৃষাণীর মাঝে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাত ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, উফশী ৯৪ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাত ১২ হাজার ৭০০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৫ মেট্রিক টন। এবার ৫ লাখ ৮ হাজার ৪৯৩ জন কৃষক আমন চাষে যুক্ত হয়েছেন। ভরা আমন মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে চলতি আমন মৌসুমে শ্যালো মেশিন ও সেচ দিয়ে জমিতে কৃষকরা আমন ধান লাগিয়েছেন। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে আমন ক্ষেত তরতাজা হয়ে উঠেছে। এ বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়েছে শীতকালীন সবজির ক্ষেতের জন্যও। ভরা বর্ষাকাল পেরিয়ে বৃষ্টির দেখা না পেলেও শরতের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টিপাতে মন ভরেছে কৃষকদের।
উপজেলার কুরুষাফেরুষা এলাকার আমনচাষি আমিনুল ইসলাম, আবুল হোসেন ও মন্টু চন্দ্র রায় বলেন, আমন আবাদ কৃষকের জন্য অনেক লাভজনক। তাই যেভাবেই হোক আমরা আমনের চারা রোপণ করেছি। কারণ এতে সেচ লাগে না, বৃষ্টির পানি যথেষ্ট। এতে ফলনও ভালো পাওয়া যায়। তবে চলতি বছর ভরা আমন মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় আমরা শ্যালো মেশিন ও সেচের পানি দিয়ে বোরো ধানের মতো ব্যয় করে আমনের চাষাবাদ করেছি। শ্যালো মেশিন ও সেচ দিয়ে গত ১ মাস আমন ক্ষেতে পানি দেওয়া অব্যাহত ছিল। তবে দুই দিনের টানা বৃষ্টিপাতের আমন ক্ষেত দেখে সত্যিই আমাদের মন ভরে গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার (কৃষি ও সিনপটিক) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর মিয়া বলেন, রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৩-৪ দিন ভারী বৃষ্টিপাত চলমান থাকতে পারে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, এ বৃষ্টির পানি মাত্রাতিরিক্ত না হলেও এটি কৃষির জন্য বড় আশীর্বাদ। দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে কিছু আমন ক্ষেত ডুবে গেলেও কোনো ক্ষতি হবে না। তবে এই বৃষ্টিটা কৃষকদের ধান ও সবজির জন্য অনেক উপকারে আসবে।
এসজি