জমি বিরোধে নারী নির্যাতন, এলাকাবাসির প্রতিবাদ
জমি বিরোধের জেরে ঠাকুরগাঁওয়ের এক অসহায় নারীকে বিবস্ত্র করে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে কুদ্দুস আলী গ্যাং'র বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত ওই নারীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌছে দেয়ায় বেলাল নামে এক গ্রাম পুলিশকেও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫আগস্ট) সদর উপজেলার রুহিয়া সেনেহারি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত কুদ্দুস আলী, আনোয়ার হোসেন (পটল), জীবন, মশিউর, মমিন, মাস্টারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্থানীয়রা তাৎক্ষনিকভাবে প্রতিবাদ মিছিল করে। পরে রুহিয়া থানা পুলিশের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, রুহিয়া সেনেহারি এলাকার কামাল হোসেন বসতভিটার জন্য রেজিস্ট্রিমুলে জমি ক্রয় করে। দীর্ঘ দিন ধরে ওই জমির কেউ দাবি না করলেও হঠাৎ একই এলাকার প্রতিবেশি কুদ্দুস আলী ওই জমি নিজের দাবি করে। এসময় উভয় পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কুদ্দুস আলী ও তার ছেলে জীবনসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী আহসান হাবীব কামালের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে পিটিয়ে জখম করে। শুধু তাই নয় তাকে বিবস্ত্র করে লাঞ্চিত করে তারা। পরে আহত অবস্থায় ওই নারী বিচারের আশায় রুহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দিকে রওনা হলে পথে আহত অবস্থায় দেখতে পায় গ্রাম পুলিশ বেলাল। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসিসহ বেলাল ওই নারীকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। কেন ওই নারীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হলো এ কারনে বাড়ি ফেরার পথে গ্রাম পুলিশ বেলালকে পথরোধ করে জীবনসহ কয়েকজন মিলে বেধরক মারপিট করে। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এমন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করে তাৎক্ষনিকভাবে প্রতিবাদ মিছিল করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের দাবি অভিযুক্তরা এলাকার সন্ত্রাসী তারা জমি দখল থেকে শুরু করে দীর্ঘ দিন ধরে অন্যায় কাজগুলো করছে প্রশাসনের সামনেই। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই আজ এমন ঘটনা ঘটেছে। অবিলম্বে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার জমিতে আমি পাটখড়ি রাখার খাড়া তৈরী করছিলাম। ওইসময় কুদ্দুস আলী সহ আরো কয়েকজন আমাকে মারপিট করে। ওই সময় একই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ২০ নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ বেলাল হোসেন (৪০) আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায় এবং ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শুনি যে বেলাল কেউ তারা মারধর করেছে। আমি কুদ্দুস ও তার ছেলের দৃষ্টমুলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত কুদ্দুস আলী পুলিশের হেফাজতে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রুহিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অনিল কুমার জানান, এ ঘটনায় কুদ্দুস আলীকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা সন্ত্রাসরা এলাকার পরিবেশ ও আইনশৃংখলা খারাপ করছে। তাদের দৃষ্টন্ত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। একজন নারীকে বাঁচাতে হাসপাতালে পৌছে দেয়া কি অপরাধ?। এ জন্য গ্রাম পুলিশ বেলালকে মারধর করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হওয়া উচিত।
তবে অভিযুক্ত কুদ্দুস আলীকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা ঢাকাপ্রকাশকে জানান, মারধরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। উভিযোগ পেলেই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএজেড