ম্যাজিস্ট্রেট সেজে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে ডিম ব্যবসায়ীর মধুর প্রেম, অতঃপর...
ছবি: সংগৃহীত
পেশায় ডিম ব্যবসায়ী, নাম তার তানজিম খান তাজ ওরফে নিরব। তবে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সেজে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে। আসল পরিচয় জেনে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি সহযোগীকে নিয়ে অপহরণ করেন। রাজশাহী থেকে অপহরণ হওয়া নারী চিকিৎসক শাকিরা তাসনিম দোলাকে (২৬) পাবনা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব।
গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার মনসুরাবাদ আবাসিক এলাকার একটি বাসায় এ অভিযান চালিয়ে র্যাব তানজিম খান তাজ ওরফে নিরবসহ চারজনকে আটক করে। আর উদ্ধার করা হয় ওই নারী চিকিৎসককে।
পুলিশ জানায়, তানজিম খানের বাবার নাম আবু হানিফ কাজী। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামে তার বাড়ি। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- তানজিমের সহযোগী পাবনার সুজানগর উপজেলার চর গোবিন্দপুর গ্রামের সেলিম মল্লিক (৩৫), সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার বড়ংগাইল গ্রামের সজিব হোসেন (২৩) ও মাইক্রোবাসের চালক আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। আশরাফুলের বাড়ি সুজানগর উপজেলার বদনপুর গ্রামে।
পরিবারের দেয়া তথ্যমতে, গত ৩০ ডিসেম্বর ফজরের আযানের পর শাকিরার বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল নামাজের জন্য মসজিদে যেতে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি পাঁচতলা বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যান। তিনি বাড়ি থেকে বের হলেই অপহরণকারীরা তাকে জিম্মি করে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ির দোতলায় উঠে তারা চিকিৎসক শাকিরাকে টেনে নামাতে শুরু করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে শাকিরার মা রেহেনা পারভীন ওরফে শিউলিকে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। তারা মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরে। তিনি পড়ে গেলে বাবা-মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
গাড়িতে তোলার পরই মুখ বেঁধে ইনজেকশন পুশ করা হয়। বকুলের চেতনা ফিরে এলে তাকে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় মহাসড়কের পাশে নামিয়ে দেওয়া হয়। আর শাকিরাকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে সলঙ্গা থানা-পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে ফিরে আসেন বকুল। পরে রাতে তিনি থানায় মামলা করেন।
অপহৃত চিকিৎসক শাকিরা (২৬) রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তিনি নগরের চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। তার বাবা আবু তাহের খুরশিদ বকুল পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
আসামিদের থানায় নিতে তারা র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে যাচ্ছেন। আসামি বুঝে নিয়ে তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান।