গ্রাম পুলিশ এসকেনের মনোনয়ন বাতিল

গ্রাম পুলিশ এসকেন আলী। ছবি: সংগৃহীত
নাটোর-১ আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী গ্রাম পুলিশ মো. এসকেন আলীর মনোনয়ন বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর পূরণ করতে না পারায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা।
সোমবার (৪ডিসেম্বর) মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা জানান, নাটোর-১ আসনে এক শতাংশ ভোটার সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৪৯৪ জন। কিন্তু এসকেন আলী মাত্র ৯৮০ জনের স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণ করতে না পারায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসকেন আলী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু সাড়ে ৩ হাজার ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে এটা জানা ছিল না। তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পর বাবা মারা যান। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে আর পড়াশোনা করা হয়নি। যে কোনো ভোট এলে খুব আনন্দ লাগে। অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে করে। এর আগে দুবার ইউপি সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। ইউপি নির্বাচনের খরচ মেটানোর জন্য একটি গরু বিক্রি করতে হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট করার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ বছর নির্বাচন করার জন্য বাড়ির পাশের এক কাঠা জমি আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। মনোনয়ন ফরম তুলে ভোটের কাজ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমার আর এক কাঠা জমি অবশিষ্ট আছে।
কতজনের সাক্ষর জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তার সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এসকেন আলী বলেন, মনোনয়ন পত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই আপিল করব।

প্রসঙ্গত, জমি বিক্রি করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন গ্রাম পুলিশ মো. এসকেন আলী। তিনি লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ এবং বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের মৃত আকবর আলী মণ্ডলের ছেলে।
এসকেন আলী দুইবার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বর) পদে ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। যেখানে একবার তৃতীয় হয়েছেন বলে দাবি করেন। একবার উপজেলা পরিষদের ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করার জন্য সকলের দোয়া চেয়ে পোস্টার লাগিয়েও আর্থিক সংকটের জন্য ভোট করতে পারেনি এসকেন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়নপত্র কেনার পরে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
