বগুড়ায় প্রহরীকে খুন করে ডাকঘরে ডাকাতি
বগুড়া জেলা প্রধান ডাকঘরে প্রশান্ত আচার্য্য (৪৫) নামে এক অফিস সহায়ককে খুন করে ডাকাতি করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৯টার তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত প্রশান্তের ভাই গোবিন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আব্দুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, রবিবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কোনো এক সময় প্রশান্তকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঈদ উপলক্ষে ডাকঘরে নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। নিহত প্রশান্ত আচার্য্য বগুড়া শাহজাহানপুরের বেজোড়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা।
প্রশান্তের ভাই গোবিন্দ আচার্য্য বলেন, ঈদের কারণে ভাইয়েরর ডাকঘরে রাতের ডিউটি ছিল। আমিও এখানে চাকরি করি। সকালে অফিসে বারান্দায় ভাইকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে জনসাধারণ এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের বড় ভাই পরেশ আচার্য্য বলেন, প্রশান্তকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। হত্যার ঘটনা চাপা দিতে ডাকাতির নাটক সাজানো হয়েছে। অফিসের অনেকেই প্রশান্তকে হিংসে করত। তাদের ধরলেই জানা যাবে কীভাবে কী হয়েছে।
ডাকঘরের সহকারী পোস্টমাস্টার রাকিব বিশ্বাস বলেন, প্রশান্তকে খুন করা ছাড়াও আমাদের বেশ কিছু টাকা-পয়সা খোয়া গেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাকে ডাকাতি চেষ্টা মনে হচ্ছে। দুর্বত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রশান্তকে খুন করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার ভাই গোবিন্দকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে পোস্ট অফিসের কিছু খোয়া গিয়েছে কি-না এটি তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে। সবগুলো দিক সামনে রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিন কাজ করছে। তবে পোস্ট অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু খোয়া যায়নি। মূল ভল্ট দুর্বত্তরা কাটার চেষ্টা করেছে। তবে কী কী খোয়া গিয়েছে তালিকা করার পর বলা সম্ভব হবে।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে মুখোশ পরা এক দুর্বৃত্তের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। ভল্টে থাকা কিছু টাকা খোয়া গিয়েছে। তবে মূল ভল্ট দুর্বত্ত ভাঙতে পারেনি। এই ঘটনায় সিআইডি ও পুলিশ গুরুত্বসহ কাজ করছে।
এসএন