চৈত্রের খরতাপে দুর্বিষহ নওগাঁর জনজীবন

নওগাঁয় চৈত্রের তীব্র তাপদাহে জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। প্রাণ ও প্রকৃতি রুষ্ট হয়ে উঠেছে। মানুষজন ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না। অতি প্রয়োজনে বের হলেও দুর্বিষহ গরমে নাকাল হয়ে পড়ছেন। অপরদিকে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি রোপা আবাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি কামনা করে ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে শহরের মুক্তির মোড় এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক সঞ্জয় দাসের সঙ্গে। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কয়েকদিন ধরে খুব রোদ ও গরম। সড়কের পিচগুলো থেকে গরমের তাপ বের হচ্ছে। তাপে হাত, পা, মুখ পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। এভাবে আমাদের রিকশা চালাতে খুব কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
শ্রী গোপাল রবিদাস নামের স্থানীয় এক দিনমজুর বলেন, গত ৭ দিন নওগাঁয় প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাজ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি একটু বৃষ্টি হতো, তবে প্রশান্তি পাওয়া যেত। এত গরম ও রোদ আর সহ্য করা যাচ্ছে না।
জেলার বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মো. হামিদুল হক জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা রেকর্ড করা হয় ৩৭ শতাংশ।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আরও বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষিতে অতি নিকটে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা এবং আবহাওয়ার তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষের সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধ এবং শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই গরমে হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাজেই তিনি সাধারণ মানুষকে অতি প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের না হতে আহ্বান জানিয়েছেন এবং বেশি করে তরল খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠ-ঘাট সব শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে। মাঠে মাঠে এখন বোরো মৌসুমে ধানের শীষ বের হওয়ার সময় অতিবাহিত করছে। এসময় ধানের জমিতে পানির বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলার সাপাহার উপজলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।
এসজি
