সম্প্রীতির ঐতিহ্য রক্ষায় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এমপি বলেছেন, শুরু থেকেই বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। যুগ যুগ ধরে এই দেশে বজায় রয়েছে ওই সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রীতির ওই ঐতিহ্য রক্ষা করতে হলে দেশের সকল ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। ভুলে যেতে হবে সকল ভেদাভেদ। আর এজন্য সকলকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি মঙ্গলবার সকাল দশটায় নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ওই সময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মপ্রাণ মুসলিম ছিলেন। তিনি ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি ঘোষণা করেন। টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতেমার জমি প্রদান করেন। কাকরাইল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। দেশে মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করেন। রেসকোর্স ময়দানে ঘোড়া-দৌড় বন্ধ করেন। বেতার ও টেলিভিশনে কোরআন তেলাওয়াত চালু করেন। তারই পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ইসলামের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছেন। হজকে সহজ, সুন্দর ও ভোগান্তিমুক্ত করতে হজ আইন-২০২১ প্রণয়ন, ছাড়াও ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনা চালু করেছেন। জেদ্দা বিমানবন্দরে হজ টার্মিনাল স্থাপন করেছেন। তিনি ইসলামী-আরবী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং দাওড়া হাদিসকে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রির সমমান প্রদান করেছেন।
দেশে ধর্মীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্মীয় নেতারা দেশের সুনাগরিক। তাদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে ধর্মের বাণী যথাযথভাবে প্রচার করে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দেশে শান্তি-সম্প্রীতি অব্যাহত রাখা গেলে উন্নয়নের কাংখিত গন্তব্যে দেশ অনায়াসে পৌঁছে যাবে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সুফল বিষয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর ফলে দেশের ডিজিপি দুই শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরো ১০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ডিজিপি দ্বিগুণ হবে।
সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়, সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা। এই নীতি আমাদেরকে সকলের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে শেখায়, মানবিক আচরন করতে শেখায়। উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির কারনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাকের মত দেশ বিপন্ন হয়ে গেছে। তাই এদেশে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম বকুল, নাটোর ও নওগাঁ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রত্না আহমেদ, পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুর রহমান, নাটোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, নাটোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজান, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি এবং নাটোর জজকোর্টের পিপি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ওই সংলাপে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লা আল শাহীন।
এএজেড