শীতে কাঁপছে নওগাঁ, তাপমাত্রা কমতে পারে আরও ২-৩ ডিগ্রি

নওগাঁ জেলাজুড়ে জাঁকিয়ে শীত। এক ধাক্কায় নওগাঁয় পারদ নামল তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ মৌসুমে নওগাঁয় এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা মৌসুমের সর্বনিম্ন অবস্থানে নামার পাশাপাশি উত্তর দিক থেকে ছুটে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাস ঝাপটা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে দিনের প্রথম ভাগে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা ব্যাপকভাবে অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তরা বলছেন, এই শৈত্যপ্রবাহ আরও ২-৩ ডিগ্রি নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু বেশি কিংবা তার কম থাকছে। এতদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও গত চার দিন ধরে নওগাঁয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকছে। আজ সকাল ৯টায় বদলগাছীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি বদলগাছীতে এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি আরও বলেন, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাওয়ার কারণে শীতের প্রকোপ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আরও তিন-চার দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে। এবার কিছুটা দেরিতে শীত আসায় শীত যাবেও দেরিতে। পুরো জানুয়ারিজুড়েই শীতের তীব্রতা থাকতে পারে। তবে কখনো শীতের তীব্রতা বাড়বে আবার কমতে পারে, এই অবস্থা চলতে থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার কিছু পরেই নওগাঁয় কুয়াশা কিছুটা ফিকে হয়ে সূর্যের আলো পড়েছে। তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়তে শুরু করে। তবে উত্তর দিক থেকে আসা প্রবল ঠান্ডা বাতাস ঝাপটা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের অনুভূতি বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয়নি। শহরে লোক ও যানবাহন চলাচল অনেক কম। মাঠে কৃষিকাজ প্রায় হচ্ছেই না। শীতে জনজীবন জবুথুবু হয়ে পড়েছে।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ আধুনিক হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে (১১ জানুয়ারি পর্যন্ত) নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৩৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। এই এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ২ হাজার ২৫৬ জন রোগী নওগাঁর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নওগাঁয় ৬০ হাজার কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৪০ হাজার কম্বলের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
এসজি
