রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৪ ডিগ্রি

রাজশাহীতে ঘন কুয়াশা কেটেছে এ সপ্তাহের শুরুতেই। রাতেও কুয়াশার তেমন একটা দাপট নেই। তবে বাতাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে শীত। কমছে তাপমাত্রার পারদ। এতে হাঁড় কাপানো শীতে জবুথবু রাজশাহীর জনজীবন। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে এই জেলায় চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন তাপমাত্রার পারদ উঠা-নামা করছে আগের চেয়ে বেশি। ভোরে তাপমাত্রার পারদ কমলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিলছে। তাপমাত্রাও বাড়ছে। আগের চেয়ে রোদের তাপও একটু বেড়েছে। তবে রাতে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা পড়ছে।
তারা আরও বলেন, বুধবার (১১ জানুয়ারি) সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। এদিন সকাল ৭টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এটি রাজশাহীতে চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এক লাফে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে।
অন্যদিকে জেলায় বুধবার (১১ জানুয়ারি) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ১০ জানুয়ারি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রাতেও ভাটা পড়েছে।
বিরতি দিয়ে রাজশাহীর উপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। সামনে তীব্র শৈতপ্রবাহের ইঙ্গিতও দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, তাপমাত্রা এখন ওঠানামা করছে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদও তেমন উঠছে না। সামনে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা আছে।
সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে বলা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে বলা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৬ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
জানা গেছে, রাজশাহীর উপর দিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে এই নিয়ে তিনটি মৃদু ও একটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে দুই অংকের ঘরে ওঠে। প্রথম দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কেটে যাওয়ার পর গত ২৯ ডিসেম্বর ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৩০ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেইসঙ্গে রামেক হাসপাতালসহ বেসরকারি হাসপাতালেও বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড়। তীব্র ঠাণ্ডায় এসব শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। এ জন্য মানুষকে সকর্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এসআইএইচ
