'দলীয় কর্মীর কলিজা ছেঁড়ার হুমকি ছাত্রলীগ সম্পাদকের'
ফেসবুকে পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে রাজশাহী নগরীর গ্যালাক্সি ম্যাট ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সবুজকে বেধড়ক পিটিয়ে কলিজা ছিড়ে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে। রাজশাহী বিমানবন্দরে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর সামনে আমিনুল ইসলাম সবুজকে প্রকাশ্যে বেধড়ক পিটিয়েছেন। মারধরের কারণে বাম কানে শুনতে পাচ্ছেন না আহত সবুজ। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ওই ছাত্রলীগ নেতার বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে মোবাইলে অশ্রাব্য গালাগালের এক মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ডও পাওয়া গেছে। জেলা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, সবুজ বাগমারা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। সম্প্রতি ফেসবুকে এই সর্ম্পকিত একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টটি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমির নজর আসে। এরপর অমি পোস্টের বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ফোনে মোহনপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আলোচনা করেন। অমি এ সময় রাজ্জাককে বলেন সবুজ যেন তাকে ফোন দেয়। রাজ্জাক এরপর অমিকে ফোন দিতে বললে সবুজ রাত ১২টার দিকে তাকে ফোন দেয়।
সবুজ জানান, সে ফোন দেয়ার সাথে সাথে অমি রিসিভি করে অশ্রাব্য ভাষায় বাবা-মাকে জড়িয়ে গালাগাল শুরু করে। জেলা ছাত্রলীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা এই ভাষায় কথা বলেবেন, এটি কল্পনাও করা যায় না। সবুজ জানান, এ ঘটনার পর শনিবার সকালে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি প্রকৌশলী এনামুল হককে বিমানবন্দরে অর্ভ্যথনা জানানোর জন্য যাই। এ সময় সেখানে ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এমপির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে সবার সামনে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অমি। সে বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অমি জানান, সবুজ ফেসবুকে উল্টাপাল্টা পোস্ট দিয়েছে। এ কারণে আমার মাথা ঠিক ছিল না। একটু শাসন করেছেন। এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা জানান, মারধর ও গালাগালের বিষয়টি শুনেছি। ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে কোনো নেতা-কর্মীর শরীরে হাত দেওয়া উচিত না। অমির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে অবগত করা হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, জেলা ছাত্রলীগের বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি গত ২৬ জুলাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুন্নবী হোস্টেলে মিলন হোসেন (১৯) নামে এক এইচএসসি শিক্ষার্থীকে রাতভর নির্যাতন করেছিলেন। পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাটের আলমগীর হোসেনের ছেলে আহত মিলন হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হন। সে অমির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) হতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাকে নির্যাতন করা হয়। এছাড়া অমির বিরুদ্ধে কয়েকজনের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এএজেড