বগুড়ায় নকল সার কাণ্ডের রহস্য উদঘাটন
চট্টগ্রামের থেকে বগুড়ায় আসার পথে ঢাকায় যাত্রা বিরতিতে টিএসপি সার বদল হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হয় র্যাব। পরে এলিট এই ফোর্স বগুড়া জেলা প্রশাসনকে অবগত করলে আটকে যায় ৭ ট্রাক সার খালাসের প্রক্রিয়া। শুক্রবার দুপুরে (২ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১২ বগুড়া কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়গুলো জানান কোম্পানী কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান।
সংবাদ সম্মেলনে এই র্যাব কর্মকর্তা জানান, আগস্ট মাসের ২৭ তারিখ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে ১২ ট্রাক সার বগুড়ায় বিতরণের উদ্দেশ্য রওনা হয়। সারগুলো ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার (বাফা) বগুড়ার গুদামে এসে পৌঁছে। তবে এর আগে যাত্রাপথে বিরতির সময় ঢাকার সাভার হেমায়েতপুরে ট্রাকে থাকা টিএসপির আসল সার সরিয়ে ওই ৭ ট্রাকে ভেজাল সার তুলে দেওয়া হয়।
দেশের শীর্ষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা পতেঙ্গা থেকে পুরো প্রক্রিয়াটিকে তাদের নজরদারিতে রাখে। এসময় হেমায়েতপুরে সারে ভেজাল দেওয়ার বিষয়ে সংস্থাটি নিশ্চিত হয়। এসংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ ও যাবতীয় প্রমাণ র্যাবকে জানায় তারা। এরপরে বগুড়া জেলা প্রশাসনকে সার খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অবগত করা হয়।
পরবর্তীতে আটক ট্রাকগুলো পাওয়া নমুনা রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাব পরীক্ষায় ভেজাল বলে প্রমানিত হয়। এরপরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার র্যাব অভিযান চালিয়ে বগুড়া বাফা গুদাম থেকে ৭ ট্রাকের চালক ও সহকারীসহ ১৩ জনকে আটক করে।
র্যাব-১২ বগুড়ার এই কর্মকর্তা আরও জানান, চট্রগ্রামের দেওয়ান হাটের এমএইচআর এন্টারপ্রাইজ নামের পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই সারগুলো বিতরণ করা হচ্ছিল। গোয়ান্দা তথ্যে ও ভিডিও ফুটেজের সূত্র অনুযায়ী ভেজাল প্রমানিত হওয়া ৭ ট্রাকের ১৩ জন শ্রমিক এই ঘটনার সাথে জড়িত। আর উনারা সবাই এমএইচআর প্রতিষ্ঠানের হয়েই কাজ করেন।
এজন্য আটক ১৩জনসহ ওই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চট্টগ্রাম টিএসপি সার কারখানার কর্মকর্তারা এ ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন। এ ছাড়াও বাফা গুদামে আটক থাকা আরও ১১ ট্রাকসহ চালক ও সহকারীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পরে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানী কমান্ডার বলেন, এই ঘটনায় আটকৃতরা হলো-ঢাকা সাভারের বনিয়ারপুরের নুর হোসেন (২৬), নগরকো এলাকার তারেক (১৯), একই এলাকার শাকিল (৩২), হানিফ (৩২), সাভার বলিয়াপুরের আব্দুল আউয়াল (৫০), সাভারের নগরকো গ্রামের শাকিল (৩১) রংপুর মিঠাপুকুরের পায়রাবতী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, মানিকগঞ্জ দৌলতপুরের মানিকগঞ্জ গ্রামের শাহ আলম (৪৩), সাভার বলিয়াপুরের আবুল বাশার (২৮), বলিয়াপুরের জসিম (২৬), বলিয়ারপুরের সোহেল (৩৫), বলিয়াপুরের আসাদুল (২৬), বলিয়াপুরের বাবু (২৫)। তাদের সবাইকে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সদর থানা পুলিশের হেফাজতে পাঠানো হবে।
এএজেড