দাফনের ৫৬ দিন পর শিক্ষার্থীর মরদেহ উত্তোলন
নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রাম থেকে দাফনের ৫৬ দিন পর সিফাত হোসেন (১৪) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে আদালতের নির্দেশে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল হোসাইন, নওগাঁ সদর থানার ওসি (অপারেশন) আব্দুল গফুর এবং সিফাতের পরিবারের লোকজনের উপস্থিতে লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
সিফাত হোসেন কীর্তিপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। সে কীর্ত্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। জানা যায়, গত ৩১ মে সকালে স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে কীর্ত্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্মরণ শাহরিয়ার, হৃতিক ও রিয়াদ হোসেন মারধর করেন।
ঘটনাটি সিফাত তার পরিবারকে জানালে ওই দিনই সিফাতের বাবা মিজানুর রহমান প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন। ন্যায়বিচার না পাওয়ায় অত্যন্ত মনোকষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে ওই দিন রাতে গ্যাস বড়ি (কীটনাশক) খায় সিফাত। গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ১জুন দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর নওগাঁর আমলী আদালত ১ এ গত ৯ জুন মামলা গ্রহণের আর্জি দায়ের করেন নিহত সিফাতের বাবা মিজানুর রহমান। পরে আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় দন্ড বিধির ৩০৬/৩৪ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তা করার অপরাধে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিষয়টি এজহার হিসেবে গ্রহণ করে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ। এই মামলার বাদী নিহতের বাবা মিজানুর রহমান।
নিহত সিফাতের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, আমার ছেলেকে আত্মহত্যার প্ররোচনা করা হয়েছে। যার কারনে অপমান সইতে না পেরে সে আত্নহত্যা করেছে। তাই আমার করা মামলায় আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য ছেলের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। আমি জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, আদালতের নির্দেশে দুপুরে সিফাত নামের ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। তারপর ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এএজেড