বগুড়ায় ভ্যানচালক হত্যার রহস্য উন্মোচন, নারীসহ গ্রেপ্তার ৫
বগুড়ায় হাফিজার রহমান গাছু (৭০) নামে বৃদ্ধ ভ্যানচালক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ভ্যান ছিনতাইকারীরা চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে হত্যা করে গাছুকে। এ ঘটনায় জড়িত এক দম্পতিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর চান মণ্ডলের ছেলে মজনু মণ্ডল (৩২), মজনুর স্ত্রী মাহমুদা বেগম (২৫), মজনুর বোন জামাই ও কালুবাড়ি এলাকার মৃত ইসমাইল হকের ছেলে মো. মজনু (৩৬) এবং বগুড়া শিবগঞ্জের রহবল এলাকার মৃত আবুল মণ্ডলের ছেলে সাইদুর মণ্ডল ওরফে মগা (৩২)। এ ছাড়া সন্দেহভাজন আরও এক আসামি আছেন, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
এ সময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, আব্দুর রশিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিবির ও শিবগঞ্জ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মেঘাখর্দ্দ দক্ষিণপাড়া এলাকার হাফিজার রহমান গাছুকে অচেতন অবস্থায় ডাকুমারা বাজার থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে চিকিৎসার জন্য গাছুকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর ভোর পৌনে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গাছু। পরে নিহতের ছেলে আমিনুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে শিবগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, মামলার পর পুলিশ বিভিন্ন মাধ্যম অবলম্বন করে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রহবল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে সাইদুর রহমান ওরফে মগাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে রহবল দক্ষিণপাড়া এলাকার জনৈক হাসান আলীর বাড়ি থেকে নিহতের চুরি যাওয়া ভ্যান উদ্ধার করা হয় এবং শুক্রবার গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকা থেকে মজনু মণ্ডল, তার স্ত্রী মাহমুদা এবং মজনুর বোন জামাই মজনুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার দিকে মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সোনাতলা বালুয়াহাটা যাওয়ার কথা বলে গাছুর ভ্যান ভাড়া করে মজনু ও মাহমুদা। যাওয়ার পথে ডাকুমারা বাসস্ট্যান্ড পৌঁছলে তারা চা পানের কথা বলে দাঁড়ায়। পরে কৌশলে মাহমুদা গাছুর চায়ের কাপে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে দেন। চা খাওয়া শেষে সবাই পুনরায় গাছুর ভ্যানযোগে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডাকুমারা থেকে বালুয়াহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে পথে ভ্যানচালক গাছু অচেতন হয়ে যান। পরে তাকে ঘটনাস্থলে ফেলে দিয়ে মজনু মণ্ডল, তাহার স্ত্রী মাহমুদা এবং মজনুর ভগ্নিপতি মজনু গাছুর ভ্যানটি অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পরে তারা সাইদুল মণ্ডল ওরফে মগার কাছে ভ্যান বিক্রি করে দেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সাইদুল মণ্ডল ওরফে মগা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার এবং ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর মামলার রিপোর্ট দেওয়া হবে।
এসআর/এমএসপি