দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আবারও জেঁকে বসেছে শীত। মাঘের প্রথম দিন থেকে জেলায় কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে বইতে শুরু করায় দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষদের।
শনিবার (২২জানুয়ারি) সকালে জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি রেকর্ড করেছে তেতুঁলিয়া আবহাওয়া অফিস। মাঘ মাসে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। কাজ না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষেরাও। জেলায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক শীতার্ত মানুষ। তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসন প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও শীতার্তদের জন্য এগিয়ে এসেছেন।
সদর উপজেলার বুড়িরবান গ্রামের দিনমজুর বাবুল হোসেন (৪০) জানান, ভাঙা বেড়ার ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করি। লেপ-তোশক নেই। খড় ও চটের বিছানায় থাকি। আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না।
একই এলাকার নাজমুল হোসেন (৩১) জানান, 'দিন এনে দিন খাই। কাজ না পেলে খাবারের ব্যবস্থার কোনো উপায় নেই। আমরা না পেলাম কম্বল, না পেলাম ঘরবাড়ি। কাজ খুঁজব না মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরব! আমাদের কেউ নেই আল্লাহ ছাড়া।'
পঞ্চগড় পৌরসভার নিমনগড় এলাকার লাইলী বেগম বলেন, 'শীতে কাঁবু হয়ে গেছি। না পেলাম কম্বল, না পেলাম ঘরবাড়ি। শীতে খুব কষ্ট হয়।'
জেলা সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের পাথর ও বালুশ্রমিক শহিদুল ইসলাম জানান, 'শীতের সকালে বরফ ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর ও বালু তুলতে হয়। জীবনের তাগিদে সবকিছুই করতে হয়। শীতকে ভয় করলে কি চলবে?'
জেলা শহরের ক্ষুদ্র চা দোকানদার রবিউল ইসলাম জানান, 'প্রতিদিন সকালে দোকান খুলতে হয়। ঠান্ডায় যাতায়াত করা কষ্ট। তবুও প্রতিদিন যাতায়াত করি।'
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ্ জানান, 'শনিবার সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ থাকায় ঠান্ডা বেড়েছে। আগামী তিন থেকে চার দিন তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।'
টিটি/