শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

থামছে না তামাক চাষ, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে কৃষকরা

মাটি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর তামাকের চাষাবাদ। সরকারের পক্ষ থেকে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হলেও তামাক প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সহযোগিতায় দিন দিন তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নীলফামারীর কৃষকরা।

বিনা মূল্যে বীজ, ঋণের ওপর সার ও নগদ অর্থসহ জমিতে অন্য ফসলের চেয়ে তামাকের উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে তামাকের আশানুরূপ মূল্য পাওয়ায় উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। দিন যত বাড়ছে ততই বাড়ছে তামাকের চাষ। এ অবস্থায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ও কৃষকরা।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, তামাক চাষ ও সেবন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। তামাক পাতা, বিড়ি, সিগারেট, গুল, খইনি ও জর্দাসহ এ ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করায় বাড়ছে ক্যানসারসহ নানা রোগ। তামাক চাষে কৃষকদের পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তামাকের উৎপাদন ভালো হয়েছে বলে তামাক চাষীরা জানিয়েছেন।

এছাড়া তামাক কাটার পর রোদে শুকিয়ে আঁটি বেঁধে ঘরে তুলতে হয়। বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত নাড়াচাড়া করতে হয়। এরপর তামাক যায় কোম্পানির গোডাউনে। সেখানেও তামাক পাতা সংরক্ষণ করতে হয়। এতে তামাকের গন্ধ সরাসরি মানবদেহে প্রবেশ করে শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ আক্রান্ত হয়।

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তামাকজাত দ্রব্য সেবনে বিশেষ করে নাক, গলা, ঠোঁট ও মুখের ক্যানসার হওয়ার শতভাগ ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে গলার ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ধূমপানে বিষপান এই কথার কোনও বিকল্প নেই। ধূমপায়ীদের সামাজিকভাবে সচেতন করতে হবে। তাহলে সুফল আসতে পারে।

সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সাল থেকে ব্রিটিশ আমেরিকা ট্যোবাকো, জাপান ট্যোবাকো, আকিজ ট্যোবাকো, ঢাকা ট্যোবাকো, আবুল খায়ের ও আলফা ট্যোবাকোসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি দীর্ঘদিন যাবৎ এই অঞ্চলে তামাক চাষ ও বিস্তারে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছে। এসব কোম্পানি চাষিদের তামাক পোড়ানোর সরঞ্জাম সরবরাহ এবং দাদন হিসেবে অগ্রিম টাকা দেওয়ার প্রলোভনে ফেলে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাক চাষে নামিয়েছে। কৃষি জমিতে তামাক আবাদের ফলে চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদ ও রবিশস্য উৎপাদনে ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা সদর, ডোমার,কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, জলঢাকা উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে দিগন্তজোড়া ধানেরক্ষেতের সবুজ মাঠের বুক চিরে কীভাবে তামাক চাষাবাদ করা হয়েছে। চোখের দৃষ্টি যতদূর যায়, শুধু ধরা পড়ে তামাক চাষের মহোৎসব। তামাক কাটার পর রোদে শুকিয়ে আঁটি বেঁধে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত কৃষান-কৃষানীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে, জেলায় গত অর্থবছরে তামাক চাষে জমির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬৭০ হেক্টর। এ বছর তামাক চাষ হয়েছে ২ হাজার হেক্টর জমিতে। সেই হিসেবে এবার ৬৭০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ কম হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার তামাকের চাষ বেড়েছে।

জেলা সদরের ইটাখোলা, লক্ষ্মীচাপ, কচুকাটা, টুপামারী, পঞ্চপুকুর, গোড়গ্রাম, খোকশাবাড়ি, কুন্দপুকুর, চাপড়া সরেমজামি, সোনারায়, সংগলশী; জলঢাকা উপজেলার খুটামারা, কাঠালী, কৈমারী, শৌলমারী, মীরগঞ্জ, গোলনা, বালাগ্রাম, ডাউয়াবাড়ি, গোলমুণ্ডা, ডোমারের সদর, হরিণচড়া, বোড়াগাড়ী, জোড়াবাড়ি, বামুনিয়া, কেতকীবাড়ি, ভোগডাবুড়ি এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ও পুটিমারী এলাকায় সবচেয়ে বেশি তামাক চাষ হয়েছে।তবে এবার ডিমলা উপজেলায় কোন তামাক চাষ হয়নি বলে কৃষি বিভাগ নিশ্চিত করেছে।

সদরের টুপামারি ইউনিয়নের দলুয়া দোগাছি গ্রামের কৃষক আজিজুল বলেন, এবার তামাক চাষ করেছি তিন বিঘা জমিতে। ধান আবাদ করে লোকসান গুনতে হয়। বাধ্য হয়ে তামাক চাষ করেছি। গতবার চার বিঘা জমিতে চাষ করলেও এবার তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছি। তামাক চাষ ক্ষতিকর জেনেও লাভের আশায় চাষ করি।

একই এলাকার কৃষক রমিজ উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর তামাকের আবাদ করি। কিন্তু এবার তামাকের বদলে এক বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। যদিও তামাক লাভজনক। তারপরও তামাক ক্ষতিকর জেনে ধান চাষ করেছি। তুলনামূলকভাবে ধান, আলু, গম, ভুট্টা ও পাটসহ অন্যান্য ফসলের ন্যায্যমূল্য পেলে তামাক চাষে মুখ ফিরিয়ে নেবেন কৃষকরা।

তামাকের শুকনা পাতা সংগ্রহের সময় কথা হয় ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের স্বপ্না রানীর সাথে। তিনি বলেন, প্রতিবছরই তামাক আবাদ করি আমরা। তামাক শরীরের জন্য ক্ষতিকর সেটা আমরা জানি তারপরও কাজ না করে উপায় কি? যেহেতু নিজের জমির আবাদ তাই কাজ তো করতেই হবে।

একই এলাকার কৃষক খগেন চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমানে শ্রমিকের অধিক দাম, যে টাকা খরচ করে অন্য ফসল চাষ করি বাজারে সঠিক দাম না থাকায় বিক্রি করে সেই টাকা ওঠে না। অল্প খরচে কোম্পানির টাকায় তামাক চাষ করে অধিক লাভ হয়। স্বাস্থ্যের ক্ষতির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখন তামাকের কাঁচা পাতাগুলো গাঁথি তখন গন্ধে খারাপ লাগে। কিন্তু কী করব? এখন তো খেয়ে বাঁচি। পরে যা হওয়ার হবে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, তামাক চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করছে ঢাকা টোব্যাকো, আবুল খায়ের টোব্যাকো, নাসির টোব্যাকো, আকিজ টোব্যাকোসহ বেশ কয়েকটি তামাক কোম্পানি। তারা তামাক চাষে অগ্রিম টাকাসহ কৃষকদের সার ও বীজ সরবরাহ করে।

এছাড়াও তামাক কোম্পানির কর্মীরা প্রতিদিন মাঠে গিয়ে চাষির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কখনও অন্য ফসল উৎপাদনের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ দেখা যায়নি। চাষিদের দাবি-বোরোর মৌসুমে বীজতলা, সবজি ও ফসলের ক্ষেত নষ্ট হলেও কৃষি অফিসের লোকজনকে সংবাদ দিয়েও দেখা পাওয়া না।

তামাকের ডাটা ও পাতা কাটা চাতালে কাজ করেন গঙ্গারাম। তিনি বলেন, আমি ১০ বছর ধরে এই চাতালে মেশিনে তামাক পাতা কেটে বিড়ির শুকা বানাই। এতে আমার চোখ ও গলায় বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। রাতে চোখে দেখি না। সর্দি-কাশিতো লেগেই আছে। এই কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে চাই।

তামাক আড়তদার শফিকুল ইসলাম তুহিন বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত পণ্যের ৮৫ ভাগ আয় আসে তামাক থেকে, যা দিয়ে কৃষকরা সংসারের খরচ ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগান দেয়। অন্য ফসলের ক্রয়-বিক্রয়ের নিশ্চয়তা এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে তামাক চাষের প্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে।

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নুরুল হুদা মিন্টু বলেন, জর্দা, গুল, খইনি ও ধূমপানের ফলে নাক, মুখ, দাঁতের মাড়ির ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে চলে যায়। হাসপাতালে এ ধরনের রোগী হরহামেশা চিকিৎসা নিতে আসেন। বিশেষ করে হাঁপানি, অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিসসহ নানা ধরনের রোগী আসেন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, জর্দা, গুল, খইনি, বিড়ি ও সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপানে পর্যাপ্ত নিকোটিন মানবদেহে প্রবেশ করে শ্বাসনালীর ক্ষতি করে। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কান, নাক, গলা, মুখ ও ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবু বাড়তি লাভের আশায় তামাক চাষ করছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে তামাক উৎপাদন কমেছে। আশা করছি, আগামীতে তামাকের চাষ আরও কমবে।
এএজেড

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি