কুড়িগ্রামে পচা চাল সংগ্রহ, খাদ্যগুদাম সিলগালা
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভিজিডিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ভালো চাল পরিবর্তন করে পচা চাল সংগ্রহের অভিযোগে খাদ্য গুদামে সিলগালা করেছেন রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল ইমরান।
মঙ্গলবার গভীর রাতে রৌমারী খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে খাবারের অনুপযোগী ১৯ মেট্রিকটন চালসহ ১ নম্বর গুদাম সিলগালা করা হয়।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকালের দিকে কুড়িগ্রাম থেকে চালের নমুনাসহ কুড়িগ্রাম খাদ্য পরিদর্শক পারভেজ হোসেন, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হক ও রৌমারী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাউদ্দিন বসুনিয়াসহ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম আসে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তদন্ত করে নমুনা চালের সঙ্গে সীলগালা চালের কোনো মিল খুজে পাননি বলে জানিয়েছেন তদন্ত টিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভিজিডিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ৩০০ মেট্রিক টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্যগুদাম থেকে রৌমারী গোডাউনে ঢোকার কথা। সে মোতাবেক ১৫৪ টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্যগুদাম থেকে পাঠানো হয়। অজ্ঞাত কারণে সেই ভালো চাল না ঢুকিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পচা চাল সংগ্রহ করে গুদামে ঢুকানো হয়েছে। অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান গুদামে পচা চাল রাখার সত্যতা পান।
এ বিষয়ে রৌমারী খাদ্য গোডাউনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বলেন, কুড়িগ্রাম খাদ্যগুদাম থেকে ১৫৪ মেট্রিক টন চাল পাঠিয়েছে। ১০০ মেট্রিক টন এখনও নৌকায় আছে। ৫৪ মেট্রিক টন ট্রাক্টরে আসতে দেরি হওয়ার কারণে রাতে চাল ঢোকানো হয়। এসময় তিনি কুড়িগ্রাম খাদ্য গুদামের ৫৪ মেট্রিক টনের চালান পত্র দেখান।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান জানান, রৌমারী খাদ্য গোডাউনে পঁচা চাল ঢোকানো হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় গোডাউনে ঢোকানো অবস্থায় ট্রাক্টরে ৭৭ বস্তা ও গোডাউনের ভিতরের ১৯ মেট্রিকটন পচা চালসহ গুদাম সিলগালা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, রৌমারী উপজেলার জন্য ভিজিডিসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্যগুদাম থেকে রৌমারী খাদ্য গোডাউনে যাবে। ইতিমধ্যে ১৫৪ মেট্রিক টন চাল কুড়িগ্রাম খাদ্যগুদাম থেকে ছাড় করা হয়েছে। ৫৪ মেট্রিক টন রৌমারী খাদ্য গোডাউনে চলে গেছে। ১০০ মেট্রিক টন চাল নৌকায় করে যাচ্ছে, নদীতে আছে। পচা চালের বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম থেকে পাঠানো চালের নমুনাসহ তদন্ত পাঠাচ্ছি সেটা দেখার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম খাদ্য পরিদর্শক পারভেজ হোসেন বলেন, নমুনা চালের সঙ্গে সিলগালা করা পচা চালের কোনো মিল নেই। এখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। যিনি এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।
এআর/টিটি