শীতে বাড়ছে মুরগির রোগ, চিন্তায় খামারিরা
শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রায় তিন শতাধিক মুরগির খামারে বিভিন্ন জাতের মুরগি ও মুরগির বাচ্চার ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে মুরগি পালন ও পরিচর্যা করতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা।
শীতের তীব্রতার কারণে এসব খামারে মুরগির শেডে কৃত্রিমভাবে তাপমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। ব্রুডার পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক বাল্ব, কেরোসিন বাতি ও হারিকেন জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে।
তাড়াশ পৌর বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানালেন, মুরগির খাবারের দাম বস্তা প্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ছোট-বড় প্রায় তিন শতাধিক মুরগির খামার রয়েছে। এতে বিভিন্ন জাতের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মুরগি পালন করা হচ্ছে। এ সমস্ত খামারে সাধারণত লেয়ার, পাকিস্তানি লেয়ার, ব্রয়লার, কক, সোনালি ও দেশি জাতের মুরগি পালন করা হয়। তবে বর্তমানে শীতের তীব্রতা বাড়ায় অনেক খামারে মুরগি ও বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, শীতকালে সাধারণত তাপমাত্রা কম থাকায় মুরগির ঠান্ডাজনিত অসুখ-বিসুখ হয়। এ সময় মুরগি ভাইরাসজনিত রানীক্ষেত, গামবোরো, ম্যারেকস্, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, ডাক পেন্টগ, ইনফেকসাস ল্যারিংগোট্র্যাকিয়াইটিস হয়। এ ছাড়া ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ফাউল কলেরা, ফাউল টাইফয়েড, রক্ত আমাশায় ও কৃমি হয়।
তিনি আরো জানান, মুরগির শেডে স্বাভাবিকভাবে ২৫ থেকে ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু শীতকালে রাতে ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি এবং দিনে ১৬ থেকে ১৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকার ফলে এ সময় মুরগির ঠান্ডাজনিত রোগ বেশি হয়। তাই খামারে তাপমাত্রা বাড়াতে ব্রুডার পদ্ধতি মেনে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি মুরগির রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রতিষেধক ও পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামের মো. ইউনুস মোল্লা, হারুন প্রামাণিক, ছাবেদ আলীসহ একাধিক মুরগি খামারিরা জানান, শীতের তীব্রতার কারণে মুরগির নানা রকম রোগ-ব্যাধি হচ্ছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগে অনেক খামারে মুরগি মারাও যাচ্ছে। তা ছাড়া মুরগির খাবারের দাম বাড়ায় বাজারে মুরগির মাংস ও ডিমের দামও বর্তমানে বেড়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. সোহেল আলম খান বলেন, মুরগির খামারীদের মুরগি পালন ও পরিচর্যার জন্য নিয়মিত পরামর্শ ও প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে।
এসএন