চিকিৎসক সেজে রামেক হাসপাতাল থেকে রোগীর নমুনা সংগ্রহ!
রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ দুজন ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে। চিকিৎসক সেজে তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। তারপর রিপোর্ট দেওয়ার জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেকে টাকার জন্য রোগীর স্বজনকে মারপিট করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে এমন কাজ করে আসছিলেন তারা।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন, নগরীর রাজপাড়া থানার কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা সালমান শরিফ বাবু (৩৫) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার মকরমপুরের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (৩৭)। নগরীর লক্ষ্মীপুর কাঁচাবাজার এলাকার ভাড়াটিয়া জাহিদ।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, রামেক হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম। সোমবার রাত ১০টার দিকে আসামি সালমান শরিফ নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ওয়ার্ডে ভর্তি সিরাজুল ইসলামসহ তিন রোগীর শরীর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ভেবেই রোগীরা রক্ত দেন। রক্ত সংগ্রহের পর সালমান শরিফ রোগীর ছেলে সুমন আলীকে ১ ঘন্টা পরে ‘রাজশাহী ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে ডাকেন। সুমন আলী রাত ১১টায় রাজশাহী ডায়াগনস্টিক সেণ্টারে তার বাবার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট চাইতে গেলে আসামিরা চার হাজার টাকা চান।
তখন সুমন জানান, সরকারি চিকিৎসক ভেবে তারা পরীক্ষা করার জন্য রক্ত দিয়েছেন। এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। তাই সুমন তার বাবার কাগজ ফেরত চান। তখন আসামি সালমান ও জাহিদসহ অজ্ঞাত আরও দুজন তাকে রাজশাহী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আটক রেখে মারপিট করেন এবং তার পকেটে থাকা ৪ হাজার ৫০ টাকা জোর করে কেড়ে নেন। পরে সুমন আলীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজপাড়া থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়।
ওসি জানান, মামলা হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওসি জানান, এই প্রতারকরা অ্যাপ্রন পরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে চিকিৎসক সেজে রোগীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন। প্রমাণের অভাবে তাদের ধরা যাচ্ছিল না। এবার ধরা সম্ভব হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
এসএসকে/এএন