সিলেটের সেই দুই নির্বাচন কর্মকর্তাকে জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
সিলেটের জকিগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সিলমারা ব্যালটসহ গ্রেপ্তার নির্বাচন কর্মকর্তা শাদমান সাকীব এবং আরিফুল হককে দুইদিন জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌকি আদালতে পুলিশের চাওয়া ৫ দিনের রিমান্ড শুনানি শেষে বিচারক শ্যাম কান্ত সিনহা ওই দুই কর্মকর্তাকে দুইদিন জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষে অংশ নেন সিএসআই নুর হোসেন। অপরদিকে, আসামি পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন এবং অ্যাডভোকেট কাওসার রশিদ বাহার।
শুনানি শেষে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সুমন চন্দ্র সরকার।
তিনি বলেন, ‘দুই জনের পাঁচদিন করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত দুইদিন করে জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
এদিকে, দুই রির্টানিং কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার খবরে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রায় অর্ধশত প্রার্থী। বিক্ষোভে প্রার্থীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ শাদমান সাকীব এবং আরিফুল হকের শাস্তি চেয়ে নানা শ্লোগান দিয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ইউপি ভোটের দিন বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে জকিগঞ্জের মরিচা ভোট কেন্দ্রের সামনে থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সিল দেয়া এবং ১ হাজার ২০০টি খালি ব্যালট পেপার, ৮টি মুড়িবই, ৮টি ব্যালেট বাক্সের সিলগালা লক, নগদ ১ লাখ সাড়ে ২১ হাজার টাকা, ফেন্সিডিলের খালি বোতল, কালো রঙের ঢাকা মেট্রো-ঠ ১৩-৭০২৮ গাড়িসহ প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েন রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব এবং আরিফুল হক। পরে তাৎক্ষণিক কাজলসার ইউপি ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
সুলতানপুর ইউপির গণিপুর ভোটকেন্দ্রেও সিল মারা ব্যালেট পেপার বাক্সে ভরার ঘটনায় উত্তেজিত ভোটাররা ওই কেন্দ্রের ব্যালেট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দিলে গণিপুর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণও স্থগিত করা হয়।
এ ঘটনায় দুই রির্টানিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মরিচা ভোট কেন্দ্রের ইনচার্জ জৈন্তা থানার সহকারী উপ-পরির্দশক (এএসআই) আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃত শাদমান সাকীব (৩২) উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং আরিফুল হক (৩৬) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। নির্বাচনে তারা দুইজন রির্টানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৬ জানুয়ারি রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে রির্টানিং কর্মকর্তা আরিফুল হক থানা হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সপ্তাহে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে এ দুই কর্মকর্তার ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানির জন্য সোমবার (১৭ জানুয়ারি) নির্ধারণ করেন।
এসইউ/এমএসপি