নারায়ণগঞ্জজুড়ে উৎসবের আমেজ
ভীতিহীন ভোটের প্রত্যাশা নগরবাসীর
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ ছিল মিছিল-মিটিংয়ের নগরী। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) শহরের চিত্র ঠিক তার উল্টো। ব্যস্ত কোলাহল মুখর এক শহর। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া মোড় কিংবা রেলগেট এলাকা সর্বত্রেই মানুষের উপস্থিতি। মুখে মুখে আলোচনা আগামীকালের ভোট নিয়ে।
শীতলক্ষ্যার ওই পাড়ে একই চিত্র দেখা গেল। পাড়ার মোড়ে মোড়ে মানুষের আড্ডা, চায়ের দোকানগুলোতে তুমুল আলোচনা চলছে নির্বাচনকে ঘিরে। কে জিতবে, কে হারবে এমন হিসাব-নিকাশ কষছেন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা। আর সাধারণ মানুষের ভাবনায় উঠে আসছে ভয়ভীতি, শঙ্কাবিহীন সুষ্ঠু, সন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়টি। অবশ্য কেউ কেউ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে সবারই প্রত্যাশা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আগামীকালের (রবিবার) নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।
শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়ে বন্দর এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলছিলেন, এবার লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি। কিন্তু উন্নয়ন ব্যক্তি ইমেজসহ নানান কারণে এগিয়ে আছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। তবে তৈমূর আলম খন্দকারও শক্তিশালী প্রার্থী।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে। এবার যেভাবে দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে সেরকম নির্বাচন কিন্তু নারায়ণগঞ্জে হবে না।
বন্দরের আমি এলাকার বাসিন্দা আকলিমা বেগম বলছিলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাবুরাইল এলাকার ভোটার। ষাটোর্ধ্ব এই নারী বললেন, এই ভোট নিয়ে মানুষের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। কে পাস করেছে, কে ফেল করে তা বলতে পারব না তবে ভোট দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে হবে সেটা আমি বলতে পারি।
তিনি আরো বলেন, আমি সকালেই নিজের এলাকা বাবুরাইল এগিয়ে ভোট দিব।
একি এলাকার বাসিন্দা মন্টু দাস বলেন, এর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এবার কি হয় দেখা যাক। তবে আমরা আশা করি শান্তিপূর্ণই হবে।
সিটি করপোরেশনের বেপারী পাড়ার বাসিন্দা হোসেন মোহাম্মদ লাল বলেন, উৎসব উৎসব আমেজ আছে। ভোট শান্তিপূর্ণ হলে কি হবে, যে মেশিনে ভোট নিবে আগে যেখানে ৫ হাজার ভোট কাস্ট হতো, এবার সেখানে মেশিনের কারণে ভোট কম পড়বে। কারণ মেশিনে ভোট দিতে অনেক সময় লাগে। আগে তো ব্যালট নিয়েই পছন্দের প্রার্থীকে সিল দিতাম। এবার সেটা হবে না।
২৩ নম্বর ওয়ার্ডের একরামপুর এলাকার বাসিন্দা রমজান মিয়া বলেন, এবারের ভোট নিয়ে কোন ভয়ভীতি নেই, শঙ্কা নেই। ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারবেন। কোথাও থেকে কোনো বাধা-বিপত্তি আসবে না। সবার মাঝেই একটা উৎসব উৎসব ভাব আছে। মেয়র পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আইভী যেহেতু সরকারি দলের প্রার্থী, সেহেতু প্রশাসন যদি আইভীর পক্ষে থাকে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে রমজান মিয়া বিশ্বাস করেন এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যে পরিবেশ তাতে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবেই কাজ করবে, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।
একি এলাকার বাসিন্দা মফিজ উদ্দিন যোগ করেন, আগের দুই নির্বাচনে প্রশাসন কঠোর ও নিরপেক্ষ ছিল। আমরা আশা করছি আবারো একই ভূমিকা পালন করবে।
এনএইচবি/এসআইএইচ