তৈমুরের সংবাদ সম্মেলন: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে শংঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারী) রাত দশটায় তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এসময় তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে শংঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তৈমূর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের কাছে কোন ন্যায় বিচার না পেয়ে এতো রাতে আপনাদের (গণমাধ্যম কর্মী) সরনাপন্ন হতে বাধ্য হচ্ছি। সেই জন্য আমি লজ্জাবোধও করছি। এছাড়া অন্য কোন উপায়ও দেখছি না। উৎসব মুখর পরিবেশেই নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন হতে যাচ্ছিলো। প্রথম থেকেই আমরা তেমনটিই প্রত্যাশা করেছিলাম। জনগণ যেটা রায় দেবে সেইটাই আমরা মেনে নিবো। কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে এমন কিছু তথ্য আমার কাছে আসছিলো তাই সেগুলো জানাতেই আজকে (শুক্রবার) দ্বিতীয়বারের মতো এই সংবাদ সম্মেলন।
সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় আমাকে জিজ্ঞেস করে দুটি কথা। এক নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে? দ্বিতীয় শেষ পর্যন্ত আপনি নির্বাচনে থাকবেন কিন? দ্বিতীয় কথার উত্তর হলো, এখন তো আর দলে ড. কামাল হোসেন এবং শফিক রেহমান নাই। যে নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) বলবে নারায়ণগঞ্জে ওমুক প্রার্থীকে পাশ না করালে দেশের ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই নির্বাচন থেকে আমার সড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।
আর সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে এতোদিন আমি আশাবাদি ছিলাম। কিন্তু এখন আমার শংকা কাজ করছে। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, যদি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠু না হয় তবে আপনি প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। এর দায়ভার আপনাকে নিতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের বাইরের লোকজন ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন যায়গায় অবস্থান করছে। যা কিনা সম্পূর্ন নির্বাচন আচরণ পরিপন্থি।
এসময় তৈমূর আলম নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটালাইজেশন করতে গিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিভিন্ন স্কুলে সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিলো। কিন্তু আমার কাছে খবর আছে বিভিন্ন স্কুল থেকে সিসি ক্যামেরা গুলো খুলে নেয়া হচ্ছে। ইভিএম মেশিনগুলো পরিচালনার জন্য একজন অপারেটর থাকে। তারা যেনো আমাদের এজেন্টের মাধ্যমে সেগুলো অপারেটর করে। আমাদের এজেন্টের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে হবে। বহিরাগতদের বিষয়ে সবচেয়ে বড় অভিযোগ রয়েছে। নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রুপগঞ্জের একজন সংসদ সদস্যকে। যিনি সরকারের একজন মন্ত্রী। তিনি সেখানে লোক সরবরাহ করবেন। তারা সেখানে নির্বাচনটাকে তাদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করবে।
সার্কিট হাউজ এবং ডাকবাংলোয় বহিরাগত লোক আছে। এসব বহিরাগত লোকজন একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে বলে আমি মনে করি। ভোটের দিনে তাদের কোন কাজ নাই। তারা যেনো এখানে না থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আমার নির্বাচনের সমন্বয়ণক, কর্মী, সমর্থকদের গ্রেফতার এবং বাড়িতে গিয়ে রহস্যজনক তল্লাশি করছে। এতে করে আমার লোকজন সবাই শংকিত। এসব বিষয়ে আমি নির্বাচন কমিশনকে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোন ভুমিকা রাখছে না।
এমনকি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে বলেছি প্রয়োজনে ১৬ জানুয়ারির পরে গ্রেফতার করেন। কিন্তু তারা কোন ধরনের সহযোগীতাই করছে না। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি কামনা করছি। বিভিন্ন রাষ্ট্রিয় দুতাবাস, মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ সকল আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি কামনা করছি।
এসএম/