উল্লাপাড়ায় বিদেশি কুল চাষে সাফল্য
ধান, সরিষা ও সবজি চাষ বাদ দিয়ে বিদেশি জাতের কুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উল্লাপাড়ার আদর্শ কৃষক ফজলুল হক। সরেজমিন দেখা যায় তার বাগানে সারি সারি কুল গাছ। গাছগুলো আকারে ছোট। গাছে গাছে ঝুলছে আকর্ষণীয় সিডলেস ও বল সুন্দরী কুল।
কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছগুলো। বাঁশ দিয়ে ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে সেগুলো। বাগানটি রাস্তার পাশে হওয়ায় প্রতিদিন পথচারীদের দৃষ্টিতে আসছে এই কুল বাগান।
উল্লাপাড়া উপজেলার চর ঘাটিনা গ্রামের কৃষক ফজলুল হক এ বছর তার দুই বিঘা জমিতে বিদেশি জাতের সিডলেস ও বল সন্দুরী কুলের আবাদ করেছেন। এতে তিনি ৮০টি সিডলেস এবং ৮০টি বল সুন্দরী কলম রোপন করেছেন। এই কলমগুলো তিনি ভারত থেকে সংগ্রহ করেছেন। গাছগুলোতে প্রচুর কুল ধরেছে। ইতোমধ্যে তিনি কুলগুলো বাজারে বিক্রিও শুরু করেছেন।
শুক্রবার সকালে ঘাটিনা গ্রামে দৃষ্টিনন্দন কুল বাগানে গিয়ে কথা হয় কৃষক ফজলুল হকের সঙ্গে। তিনি জানান, বিদেশি কুল চাষে ভালো সাফল্যের খবরে তিনি তার জমিতে ধান, সরিষা ও সবজি চাষের পরিবর্তে প্রথমবারের মতো কুল চাষ করেছেন। বিদেশি জাতের এই কুল গাছগুলো সংগ্রহ ও রোপন করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
এসব গাছ ৫ বছর পর্যন্ত ফল দেয়। প্রতি মৌসুমে একটি সিডলেস কুল গাছ ৩০ থেকে ৩৫ কেজি কুল দেয়। অপরদিকে প্রতিটি বল সুন্দরী গাছে কুলের ফলন হয় ৭৫ থেকে ৮০ কেজি। চলতি কুল মৌসুমে তার কুল থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। বর্তমানে তিনি সিডলেস কুল বিক্রি করছেন ৪ হাজার ৪২শ টাকা মন দরে এবং বল সুন্দরী বিক্রি করছেন ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা মন।
ফজলুল হকের কুল চাষের সাফল্যে পার্শ্ববর্তী এলাকার যুবক ও বেকার ছেলেরা কুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই কুল বাগান হওয়ায় কয়েকজন শ্রমিকের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।
ফজলুল হকের কুল বাগানে দৈনিক হাজিরায় কর্মরত সোহেল রানা জানান, এই কুল বাগানে কাজ করার সুযোগ পেয়ে দুটি পয়সা আয় করতে পারছেন।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, ইতোমধ্যে তিনি ফজলুল হকের কুল বাগান তার সহকর্মীদের নিয়ে পরিদর্শন করেছেন। এ বছর ফজলুল হক প্রথম কুল চাষ করেছেন। কুল চাষে তিনি বেশ সফল হয়েছেন। তাকে দেখে এলাকার বেকার যুবকেরা কুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বেকার যুবকেরা কুল চাষ করলে তার দপ্তর থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
/এএন