ফেনীতে এখনও সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি
দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) মহাসমাবেশ আয়োজন করতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। যদিও সমাবেশের কোনো প্রশাসনিক অনুমতি মেলেনি এখনও।
দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। অনুমতি না মিললেও যেকোনো মূল্যে মহাসমাবেশ করতে দৃঢ় প্রত্যয় রয়েছে দলটির নেতা-কর্মীদের মাঝে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সাবেক হুইফ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, ফেনী ২ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাববুবুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সাংসদের সভাপতি, যুবদল কেন্দ্রীয় সাংসদের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আওতায় প্রতি জেলার ন্যায় ফেনীতেও মহাসমাবেশ হবে। সমাবেশ সফল করার জন্য বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যর বিষয় আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সভার স্থান নির্ধারণের জন্য আলোচনা করেছি। কিন্তু ফেনী থানায় অনুমতির জন্য ফোন দিলে নানা রকম টালবাহানা করে।
তিনি বলেন, যতই টালহাবানা করুক সমাবেশ করা হবে। আমরা যে স্থানের জন্য আবেদন করেছি, সে স্থানে না করতে দিলে অন্য স্থানে হলেও সমাবেশ করা হবে। অনুমতি না পেলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব প্রশাসনের। আমাদের কোনো দায়িত্ব নাই।
সমাবেশ সফলের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল। তিনি বলেন, সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে আমরা প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি সভা করছি। বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী সমাবেশ ঘিরে উজ্জীবিত রয়েছে। সমাবেশে হামলা করে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন বন্ধ রাখা যাবে না। আমরা মিজান ময়দান, শহীদ মিনার চত্ত্বর, প্রেসক্লাবের সামনে এই তিনিটি জায়গার জন্য অনুমতি চেয়েছি। প্রশাসন এখনও কিছু জানায়নি। অনুমতি দিক বা না দিক সমাবেশ হবেই, কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, সারা বাংলাদেশের ন্যায় জেলা সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করতে এই সমাবেশের ডাক দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কাছে তিনটি জায়গার জন্য আবেদন করেছি। যেকোনো মূল্যে আমরা সমাবেশ করব। অনুমতি না দিলে ভিন্ন কোনো জায়গায় হলেও সমাবেশ করা হবে।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খোন্দকার জানান, বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করার জন্য যুবদলের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সমাবেশকে সফল করার জন্য ইতিমধ্যে জেলা যুবদলের ১১টি ইউনিটের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি ৪৩টি ইউনিয়ন যুবদলের আওতাধীন ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির এই সমাবেশ সফল করার জন্য যুবদল প্রস্তুত। লক্ষাধিক মানুষ এর সমাগম হবে এই সমাবেশে। প্রশাসন অনুমতি না দিলেও এই সমাবেশ সফল করার জন্য যুবদল মাঠে থাকবে বলে জানান তিনি।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল জানান, বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদল সবাই যৌথভাবে এই সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদলের প্রতিটি ইউনিটের প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি। ফেনীতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে।
জেলা ছাত্রদল সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন জানান, মহাসমাবেশ ঘিরে জেলা ছাত্রদলের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে ছাত্রদলের সকল উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ইউনিটের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে স্থানেই হোক সেদিন সমাবেশ হবেই।
টিটি/