ঘর পাচ্ছেন গৃহহীন বৃদ্ধ মকবুল
নিজের কোনো ঘর না থাকায় বরগুনার বেতাগী উপজেলায় প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে বাস করেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদার ও তার ১৪ বছরের প্রতিবন্ধী মেয়ে মীম। গবাদিপশুর বর্জ্যের মধ্যে নিরুপায় হয়ে বসবাস করা মকবুলকে ঘর দিচ্ছেন পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানানো হয়, গৃহহীন বৃদ্ধ মকবুলের বিষয়টি গণমাধ্যমে খবর প্রচার হওয়ার পর পুনাক সভানেত্রীর নজরে আসে। তার উদ্যোগে অবশেষে ঘর পেতে যাচ্ছেন বৃদ্ধ মকবুল। ইতোমধ্যে বরগুনার পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই নিজের ঘরে থাকতে পারবেন মকবুল।
পুলিশ জানায়, মকবুল হাওলাদার উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জিলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি খালেক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির বাড়ির গোয়ালঘরে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদারের দিন কাটে মানুষের কাছে হাত পেতে। রোগা শরীর নিয়ে লাঠি এবং মেয়ের কাঁধে ভর দিয়ে পেটের দায়ে তাকে ছুটতে হয় গ্রাম থেকে গ্রামে। পুরনো কাপড় আর কিছু হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে গোয়ালঘরে শেষ বয়সের সংসার পেতেছেন এ বৃদ্ধ।
স্থানীয়রা জানান, সাত বছর আগে মকবুল হাওলাদারে স্ত্রী মারা যান। তখন মীমের বয়স ৬ বছর। তখন মেয়েকে নিয়ে একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতেন এ বৃদ্ধ। ছয় মাস আগে ঝড়-বৃষ্টিতে মকবুলের সেই কুড়ে ঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায়। প্রতিবেশী খালেদ হাওলাদারের গোয়ালঘরে ঠাঁই হয় বাবা ও মেয়ের। প্রায় ছয় মাস ধরে সেখানেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। মকবুল হাওলাদারের চার ছেলে বরগুনার বাইরে দিনমজুরের কাজ করেন। ছেলেরা কেউ তার খোঁজ রাখেন না।
এ বিষয়ে পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আমরা সব সময়ই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পুনাকের উদ্যোগে আমরা ওই বৃদ্ধ ও তার মেয়ের পাশে দাঁড়াবো। আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের বসবাসের উপযোগী ঘর করে দিতে পারবো।’
এনএইচ/এএস