ওসি প্রদীপের দুর্নীতি মামলার বিচার শুরু
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার বিচার শুরু হয়েছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনসী আবদুল মজিদের আদালতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। তার স্ত্রী পলাতক। মামলায় চার্জ গঠনের তারিখ ছিল। আদালত শুনানি শেষে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আদেশ দেন। প্রদীপের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন বিচারক। আগামী ১৭ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় প্রদীপ কুমার দাশ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিচারক অভিযোগ গঠনের পর তা পড়ে শুনালে ওসি প্রদীপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। এর আগে ২৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আজ দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ওসি প্রদীপকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ইসমাইল হোসেনের আদালতে মামলাটির শুনানি হয়েছিল। তখন আদালত চার্জ গঠন ও জামিন শুনানির জন্য রেখেছিল। গত ২২ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে প্রদীপের মামলার চার্জ গঠন পেছায়।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরের বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি কার, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে। তার ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অভিযোগপত্রে সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৯ জনকে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফের উপজেলার বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় মামলা করেন তার বোন। ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ। ২৩ আগস্ট প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। পরে চলতি বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। কক্সবাজার আদালতে ওই মামলায় সাফাই সাক্ষ্য চলছে।
এসএ/