মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে দুই যুবককে নির্যাতন: আটক ৩
ময়মনসিংহে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত-পা, মুখ বেঁধে, গাছে ঝুলিয়ে দুই যুবককে অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে।
নির্যাতনের শিকার দুজন হলেন, বাদশা মিয়া ও খোরশেদ আলম। তাদের দুজনকে গত ৬ ডিসেম্বর রাত ২টার সময় ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়ের খালইপুড়া গ্রামে বাড়ি থেকে ধরে এনে এ নির্যাতন করা হয়।
এ ঘটনায় খোরশেদ আলমের পিতা আ. রশিদ বাদী হয়ে ফুলবাড়িয়া থানায় নির্যাতনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মালায় ৭ জনকে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন, রাধাকানাই ইউনিয়নের ধুরধুরিয়া গ্রামের রহুল আমিনের ছেলে মুরাদ হাসান, হযরত আলীর ছেলে আলাউদ্দিন, আ.খালেক ফকিরের ছেলে সোহাগ মিয়া, একই ইউনিয়নে খালইপুড়া গ্রামের আ. মজিদের ছেলে সাইদুল ইসলাম, জব্বারের ছেলে খলিল মিয়া, আ. সামাদের ছেলে উদয়, মোস্তফার ছেলে মারুফ, খলিলুর রহমানের ছেলে ছাব্বির। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৫-৬জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, নির্যাতন করার সময় ভুক্তভোগী দুজন বারবার বলেছেন, ‘আমি চুরি করি নাই, আমাকে আর মাইরেন না, আমি মইরা যামু’। তারপরও তাদের বেধড়ক পেটানো হয় এবং এমনকি তাদের আঙুল থেকে কাঁচা নখ উপড়ে ফেলা হয়। এরপর খোরশেদ এর শ্বশুরবাড়িতে হামলা করে আসামিরা।
জানা গেছে, রাধাকানাই ইউনিয়নের ধুরধুরিয়া লটিয়ারপাড় এলাকার মৃত আ. ছামাদের ছেলে উদয় মিয়ার মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার তিন সপ্তাহ পর মোবাইল চুরির অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী দুজনকে মুরাদ, সোহাগ, সাইদুল, আলাউদ্দিন রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।
স্থানীয় আলম মিয়া ও কাজল মিয়া বলেন, দরিদ্র অসহায় দুই ছেলেকে গাছে টানিয়ে মারধরের করেছে এ ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
বাদশার মা শাহনাজ বেগম বলেন, আমার ছেলেকে মারধর করে ঘাতকেরা বাড়িতে ফেলে যায়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করি। আমি অপরাধীদের শাস্তি চাই।
অভিযুক্তদের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ফুলবাড়ীয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা জাকির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় গত শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সাব্বির, আলাউদ্দিন ও খলিল নামের ৩ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
একে/এএন