রংপুরে একসঙ্গে চার শিশুর জন্ম: মারা গেলো দুই শিশু
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একসঙ্গে জন্ম নেওয়া চার নবজাতকের মধ্যে আরও এক শিশু মারা গেছে। এ নিয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হলো। জীবিত বাকি দুই শিশুর অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বুধবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ছেলে শিশুটি মারা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিশুদের বাবা মনিরুজ্জামান বাঁধন চিকিৎসকের অবহেলা এবং ওয়ারমার (মেশিন) নষ্ট থাকায় ঠিক মতো সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন।
মনিরুজ্জামান বাঁধন অভিযোগ করে বলেন, একসঙ্গে চার শিশুর জন্মের সংবাদ সংগ্রহে হাসপাতালে সাংবাদিকরা বারবার আসা-যাওয়ায় চিকিৎসক-নার্সরা ক্ষুব্ধ। তারা আমাদের ওপর রেগে আছেন। ঠিক মতো সেবা দিচ্ছেন না। আমার বাচ্চাগুলোকে সারাদিন নষ্ট মেশিনে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে আমার এক ছেলে ও এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দায়িত্বরত নার্স-চিকিৎসক কেউই সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না। সকালে বলছেন বাচ্চাদের অক্সিজেন লাগবে না; সন্ধ্যায় বলছেন- অক্সিজেন লাগবে। এটা কেমন কথা! ওনারা আমার বাচ্চাদের মেরে ফেলছেন। একসঙ্গে চার সন্তানের বাবা-মা হওয়া কি অপরাধ?
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক মনিকা মজুমদার তিনি বলেছেন, সংকটাপন্ন নবজাতকদের ওয়ারমারে রাখা হয়েছে। কিন্তু এমন বাচ্চাদের টিকিয়ে রাখা চিকিৎসকদের জন্য কঠিন কাজ। আমরা আমাদের সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। একেকটা বাচ্চার ওজন মাত্র ৭০০ গ্রাম। মূলতঃ ওজন কম হওয়াতে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তবে আমাদের চিকিৎসার কোনো সমস্যা নেই।
এর আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (গাইনি বিভাগ) ডা. ফারহানা ইয়াসমিন ইভা বলেছিলেন, গর্ভধারণের আট মাস পর এই চার নবজাতকের জন্ম হয়। এর মধ্যে শুধু ছেলে নবজাতকটির ওজন ছিল মাত্র সোয়া কেজি। বাকি তিন কন্যাশিশুর ওজন ও গঠন ঠিক আছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন কড়িগ্রামের মনিরুজ্জামান বাঁধনের স্ত্রী আদুরী বেগম আশা। বিয়ের আট বছর পর এবারই প্রথম বাঁধন-আশা দম্পতির কোলজুড়ে একসঙ্গে এসেছিল চার সন্তান।
এমএসপি