সেই বৃক্ষমানবের হাত-পায়ে আবারও শিকড়!
দেশে চিকিৎসা না থাকায় হতাশায় দুর্বিষহ দিন কাটছে বিরল রোগে আক্রান্ত খুলনার পাইকগাছা উপজেলার 'বৃক্ষমানব' আবুল বাজনদারের। হাত-পায়ে আবারও শিকড় বেরিয়েছে তার। শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। এতে অর্থ সংকটে পড়েছে তার পরিবার। স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান আবুলের স্ত্রী।
জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এ পর্যন্ত আবুল বাজনাদারের পঁচিশবার অপারেশন হয়েছে।
এ বিষয়ে বৃক্ষমানব আবুল বাজনাদার বলেন, চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন-দেশের চিকিৎসায় কোনোভাবেই এ রোগ নিরময় সম্ভব নয়। তাকে মাঝে মাঝে অপারেশন করেই বাঁচতে হবে। এসব কারণে ২০১৯ সালে মে মাসে কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজ বাড়ি পাইকগাছায় চলে আসেন আবুল। কিন্তু দীর্ঘদিন চিকিৎসা না নেওয়ার কারণে হাতে আবারও আগের মতো শেকড় গজিয়েছে।
আবুল বলেন, আমাকে ডাক্তাররা যখন জানালো-আমার হাত পুরোপুরি ঠিক হবে না, এটা মাঝে মাঝেই গজাবে। অপারেশন করতে হবে। এটা জেনে আমি খুবই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই।
এমন অবস্থায় চিকিৎসকদের তিনি জানান, নতুন করে আর কোনও অস্ত্রোপচার করবেন না, বাড়ি ফিরে যাবেন। যদি এই শেকড় বাড়তে থাকে, তাহলে তিনি পুনরায় চিকিৎসা নিতে আসবেন। এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনে চিকিৎসকরা বিষয়টি লিখিত আকারে সই করার শর্ত জুড়ে দেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, সেই কাগজে সই করলে পরবর্তী চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় কাউকে কিছু না জানিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন।
আবুল জানান, হাতে সারাক্ষণ অসহনীয় জ্বালা-যন্ত্রণা হয়। ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পরও রাতে ঘুমাতে পারেন না তিনি।
আবুল বাজনাদারের স্ত্রী হালিমা বেগম জানান, স্বামীর আয় না থাকায় বাবার বাড়িতে দর্জির কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাতে হয়। বিদেশে স্বামীর চিকিৎসার জন্য এখন প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান তিনি।
সরেজমিনে জানা যায়, ১৫ বছর আগে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সরল এলাকার বাসিন্দা আবুল বাজনদারের হাত-পায়ে শিকড় গজায়। ২০১৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে অপারেশনের মাধ্যমে সেগুলো কেটে ফেলা হয়। কিন্তু অপারেশনের আগের তুলনায় এখন শিকড়গুলো বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, এই রোগের চিকিৎসার জন্য আবুলকে আবারও ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
এসআইএইচ