বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সাতক্ষীরা উপকূলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে গ্রীষ্মের শুরুতে পানির জন্য রীতিমতো হাহাকার চলছে। উপকূলজুড়ে পানি থৈ থৈ করলেও সুপেয় পানি কোথায় নেই, সবটাই লবণাক্ত। চৈত্রের খরায় প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, লবণাক্ততা বেড়ে সুপেয় পানির আধার নষ্ট হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে মিলছে না সুপেয় পানি। গ্রীষ্মের সময় থেকে বিগত ১২ বছর যাবৎ চলতে থাকা এ সমস্যার কারণে উপকূলের জনপদে মারাত্বক প্রভাব ফেলেছে।

বর্তমানে এক কলস সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন উপকূল অঞ্চলের নারী-পুরুষসহ শিশুরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করার দৃশ্য উপকূলবাসীর নিত্যদিনের কাজ। অপরদিকে নিত্যদিনের কাজে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষরা লবণাক্ত পানি ব্যবহারের কারণে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। অতিমাত্রায় লবণাক্ততা এখন উপকূলবাসীর জন্য প্রধান দুর্যোগ, যা মোকাবেলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রান্তিক মানুষরা। বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির সংকটে টাইফয়েড, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষরা।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী সাতক্ষীরার ১৩ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে বলে জানানো হলেও বাস্তবে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। পানি সংকট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে উপকূলজুড়ে খাবার পানির জন্য পুকুর খনন, টিউবওয়েল স্থাপন, পন্ডস এন্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপন এবং বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করলেও সুপেয় পানির সংকট দূর হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লির্ডাস, ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ডসহ জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের তথ্যমতে, 'সাতক্ষীরা জেলার ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮১ জন মানুষের ভিতরে উপকূলের ৫ লক্ষাধিক মানুষ সুপেয় পানির সংকটে রয়েছে।' এ কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে টেকসই, জনবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রে জানা যায়, ‘২০০৯ সালে আইলা তাণ্ডবের পর সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জসহ গোটা উপকূলীয় এলাকাজুড়ে সুপেয় পানির তীব্র সংকট হয়। ওই বছর জলোচ্ছ্বাসের কারণে নষ্ট হয়ে যায় সুপেয় পানির উৎস। এদিকে বিকল্প হিসেবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পুকুরের পানি ফিল্টারিংয়ের জন্য ৬৫০টি মেশিন বসানো হলেও বেশিরভাগ হয়ে পড়েছে অকেজো।’

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, 'প্রতি লিটার পানিতে ০ থেকে ১ হাজার মিলিগ্রাম লবণ থাকলে সেই পানি পানযোগ্য। কিন্তু উপকূলে প্রতি লিটার পানিতে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার মিলিগ্রাম লবণ রয়েছে। এ কারণে সুপেয় পানির সংকট দূর করতে জেলার ১৩২টি পুকুরের মধ্যে ৭৩টি পুনঃখনন হয়েছে। বাকিগুলোও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের পিন্টু জানান, ঘূর্ণিঝড় আইলার আগে আমাদের এলাকায় পানির সংকট খুব একটা ছিল না। ২০০৯ সালের পর থেকে এলাকায় লবণাক্ততা বেশি দেখা দিয়েছে। সুপেয় পানির সংকটও তীব্র হয়েছে।

দাতিনাখালী এলাকার শেফালী বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় খাওয়ার পানির খুবই সমস্যা। দুই-তিন কিলোমিটার দূরে কলসি নিয়ে পানি আনতে যেতে হয়। সেখানে যেয়ে আবার লাইনে দাঁড়াতে হয়। খাবার পানি সংগ্রহ করতে দিনের তিন-চার ঘণ্টা চলে যায়। খরা মৌসুমে আমাদের এলাকায় পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। পানির জন্য এই কষ্ট যে কবে দূর হবে তা জানি না। একই এলাকার রজিনা বেগম বলেন, ‘চারদিকে পানি থই থই করছে। কিন্তু, কোথাও খাওয়ার পানি নেই। বাবা আমরা এখন আর কিছু চাই না, শুধু পানি দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রাখেন।’

এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আইলার পর থেকে সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। সুপেয় পানির সংকট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ও পানির বড় ট্যাংকের ব্যবস্থা আছে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে সরকারি এবং বেসরকারি পানির ট্যাংকি প্রদান করা হয়েছে। যেসব এলাকার গভীর নলকূপ থেকে লোনা পানি উঠে সেসব এলাকায় পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাতক্ষীরা উপকূলে প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ফলে লোকালয়ে লবণ পানি প্রবেশ করছে এবং খাবার পানির আঁধারগুলো নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরা উপকূলের সব স্থানে গভীর নলকূপ সাকসেস হয় না। যেসব এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা দরকার সেখানে নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। আর এলাকার যেসব গভীর নলকূপ থেকে লোনা পানি উঠে সেসব এলাকায় পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেসব এলাকায় লবণাক্ততা বেশি সেই এলাকায় আরও প্ল্যান্টের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের মাধ্যমে রেইন ওয়াটার হারবেস্টিং ওয়াটারের কার্যক্রম চলমান আছে সাতক্ষীরা আশাশুনি ও শ্যামনগর উপকূলে। এটিএম থেকে দশ পয়সা দিয়ে প্রতি লিটার পানি নিতে পারবে ২৫ থেকে ৫০টি পরিবার। আশা করছি খুব দ্রুত এই অঞ্চলের পানি সমস্যার সমাধান হবে।’

এসআইএইচ

 

Header Ad

বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের চন্দ্রার বন্ধ হওয়া কারখানার বকেয়া বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন পাওনার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন করছেন মাহমুদ জিন্স লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা। এর ফলে দুই পাশের রাস্তার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ভোগান্তিতে পরেন যাত্রীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে চন্দ্রা মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

মাহমুদ জিন্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বকেয়া বেতনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চন্দ্রা ফ্লাইওভারের সংযোগ সড়কের উভয়পাশও অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন।

শিল্প পুলিশ, বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রা মোড় এলাকায় মাহামুদ জিন্স লিমিটেড নামে একটি কারখানা আছে। এ কারখানায় কাজ করতেন ৬০০ থেকে ৭০০ শ্রমিক। বিভিন্ন সংকটের কথা বলে কিছুদিন আগে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। আজ সকালে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন–ভাতাসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী সকাল থেকেই কারখানাটির সামনে আসতে থাকেন শ্রমিকেরা। কিন্তু এর মধ্যেই শ্রমিকদের পাওনা আজ পরিশোধ করা হবে না জানিয়ে নোটিশ টাঙিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার সামনেই বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা চন্দ্রা মোড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক বিক্ষোভ করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শকের মো. আজাদ সাথে কথা বলে জানা যায়, কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে অনেক শ্রমিক অন্যান্য জায়গায় চাকরি নিয়েছেন। কেউ কেউ এখনো বেকার। তাঁদের দুই মাসের বেতন ও অন্যান্য পাওনা আজ পরিশোধ করার কথা ছিল। সে জন্য শ্রমিকেরা সকাল থেকে কারখানার সামনে জড়ো হন। কিন্তু এর মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ আজ পাওনা পরিশোধ করতে পারবে না মর্মে নোটিশ টাঙিয়ে দেন। এ জন্য শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক ছাড়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা মহাসড়ক ছাড়ছেন না।

Header Ad

রাজধানীতে হাসনাতকে আবারও ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা থেকে ঢাকা ফেরার পথে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবারও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়ি। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, এর আগে মাতুয়াইল ও গুলিস্তানে দুইবার দুর্ঘটনার শিকার হয় তাকে বহন কারী গাড়ি। মাতুয়াইলে আঘাত করে পালিয়ে যায় একটি ট্রাক। আবার গুলিস্তানে আঘাত করে আরেকটি মিনি ট্রাক।

এদিকে পরপর এমন কয়েকটি ঘটনাকে পরিকল্পিত হামলা সন্দেহ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। 

এর আগে গতকাল বুধবার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে হাসনাত ও সারজিসের গাড়িবহরের একটি প্রাইভেটকারকে চাপা দেয় একটি ট্রাক। এতে প্রাইভেটকারটির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

পরে চাপা দেয়া ট্রাকটিকে জব্দ করে থানায় রাখা হয়। আটক করা হয়েছে চালককেও। আটক ট্রাকচালকের নাম মুজিবর রহমান (৪০)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বইলর গ্রামে।

Header Ad

থমকে গেছে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান, তদন্তে এস আলমের প্রভাব

ছবি: সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অনুসন্ধান কার্যক্রম বর্তমানে থমকে রয়েছে। সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটে এই তদন্ত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনো অগ্রগতি ছাড়াই বন্ধ হয়ে আছে। এর পেছনে এস আলম গ্রুপের প্রভাব এবং দেশের প্রভাবশালী মহলের সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে।

সিআইডি সূত্র জানায়, ৩১ আগস্ট এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাঁদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন এবং তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আনলেও তাঁদের হঠাৎ বদলি করা হয়েছে।

বদলির পেছনে কারা?
জানা গেছে, তদন্ত প্রক্রিয়াকে ধীরগতি করার উদ্দেশ্যে এস আলম গ্রুপের পক্ষে কাজ করছে একটি প্রভাবশালী মহল। বিশেষ পুলিশ সুপার মো. সরোয়ার্দী হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি হুমায়ুন কবির এবং তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেনকে একযোগে বদলি করা হয়। একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশেই এ বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্রটি জানিয়েছে, অতিরিক্ত ডিআইজি হুমায়ুন কবিরকে চট্টগ্রাম, এসএস মো. সরোয়ার্দী হোসেনকে র‍্যাবে এবং অনুসন্ধান কর্মকর্তা মনির হোসেনকে শিল্প পুলিশে বদলি করা হয়। তিন কর্মকর্তাকেই বদলি করে দেওয়ায় গত ১২ অক্টোবর থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান স্থবির। তদন্ত কর্মকর্তা এখন অনুসন্ধানের কাজ অন্য একজনকে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছেন।

সিআইডির সূত্র জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপের অর্থ পাচার অনুসন্ধানের কাজকে প্রভাবিত করার জন্য দেশে-বিদেশে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের বদলির নেপথ্যে একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত বলে জানা গেছে। অভিযোগ, তিনি এস আলমের বিষয়ে অনুসন্ধান কাজে ‘ধীরে চলো’ নীতিতে এগোতে বলেছেন। তাঁর কথা না শোনায় পুরো তদন্ত দলকে বদলি করা হয়েছে। এ নিয়ে আরও তিন-চারজন কর্মকর্তা নেপথ্যে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। দৃশ্যত এভাবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এস আলম গ্রুপ অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, এ ইউনিট এস আলমের পরিবার ও তাঁদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম ও অর্থ পাচারের ব্যাপকতা এত বড় যে দেশ-বিদেশ থেকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও অনুসন্ধান একটি জায়গায় নিয়ে আসা বড় চ্যালেঞ্জের কাজ। তার মধ্যে এ ধরনের হস্তক্ষেপ কাজটি আরও কঠিন করবে।

সিআইডি ইতিমধ্যে এস আলমের বিষয়ে তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটির কাছে চিঠি দিয়েছে। তবে গ্রুপটি এখনো কোনো চিঠির জবাব দেয়নি। সিআইডির অনুসন্ধান কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি দেখে এই বিতর্কিত ধনকুবেরের অর্থ পাচার তদন্তের উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন তাঁরা।

সিআইডির মুখপাত্র ও বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান অবশ্য এ বিষয়ে বলেছেন, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাঁর কথায়, অনুসন্ধান কর্মকর্তা বদলি হওয়ায় অন্য কর্মকর্তাকে কার্যক্রম বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা স্বাভাবিক।

সিআইডি প্রাথমিকভাবে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। গ্রুপটির কর্ণধার সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং দুই ছেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাসসহ ইউরোপে অর্থ পাচার করেছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে দাবি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পাচার করা এই বিপুল অর্থ দিয়ে তাঁরা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ কেনা ছাড়াও ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। তাঁদের পাচারকৃত অর্থে সিঙ্গাপুরে ২৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ক্যানালি লজিস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ ছাড়া ভুয়া নথি তৈরি, জাল-জালিয়াতি এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নামে-বেনামে ছয়টি ব্যাংক থেকে নেওয়া ৯৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন। বিদেশে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান (শেল কোম্পানি) খুলে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১৮ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এস আলম ও তাঁর পরিবারসহ তাঁদের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের সহযোগিতায় এ বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে এই বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচারের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত দেশের অর্থনৈতিক খাতের স্বচ্ছতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রভাবশালী মহলের চাপে তদন্ত কার্যক্রম সফল হতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
রাজধানীতে হাসনাতকে আবারও ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা
থমকে গেছে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান, তদন্তে এস আলমের প্রভাব
ভারতে পালানোর সময় চট্টগ্রামের পুরোহিত আশীষ আটক
নাটকীয় হারে গ্লোবাল সুপার লিগ শুরু রংপুরের
বাংলাদেশের নেতৃত্বকে বিভক্তি এড়িয়ে ঐকমত্যে কাজ করার আহ্বান মাহাথিরের
ট্রাম্পের ক্যাবিনেট সদস্যদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবে সরকার
গাজায় একদিনে আরও ৩৩ জন নিহত
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি জেলেকে গুলি করল মিয়ানমার নৌবাহিনী
সম্পত্তির জন্য বাবাকে তালাবদ্ধ করে রাখলো মেয়েরা
হাসনাত ও সারজিসকে হত্যাচেষ্টাকারী ড্রাইভার ও হেলপার আটক
বিমান বাহিনীকে পঞ্চম জেনারেশনে উন্নীত করাই প্রধান লক্ষ্য: এয়ার চিফ মার্শাল
দুর্ঘটনার কবলে হাসনাত-সারজিস, দুমড়ে-মুচড়ে গেল গাড়ি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনজীবী সাইফুলের গায়েবানা জানাজা
দুই দফা কমার পর আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
বিসিএসের প্রশ্নফাঁস: বিজি প্রেসের দুই কর্মচারী গ্রেপ্তার
সাত কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন মির্জা ফখরুল
ফ্যাসিবাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত: রিজভী