আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, ভারতের প্রচারণার জবাব দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে একটি জাতীয় সমাবেশ করার প্রস্তাব এসেছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, একটা প্রস্তাব এসেছে যে, ভারতের এসব প্রচারণার বিরুদ্ধে আমরা সবাই মিলে একটা সমাবেশ বা কাউন্সিল করতে পারি কিনা।
এই সভার মূল সূর ছিল, আমাদের মধ্যে মত, পথ, আদর্শের ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু দেশ-সার্বভৌমত্ব-অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক। বাংলাদেশকে দুর্বল ভাবার কোনো অবকাশ নেই। এটা একটি জাতীয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে, রাজনৈতিক সমাবেশের মধ্যে দিয়ে এই বার্তা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। জাতীয় ঐক্য নিয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক শেষে বুধবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর ছাড়া সব রাজনৈতিক দল আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মতাদর্শের ভিন্নতা স্বত্বেও তারা সবাই একত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন এবং ঐকমত্য জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ভারতে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা এবং বাংলাদেশ মিশনে হামলা, বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে বৈঠকে। এসবের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা এবং সরকারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, ভারতের এসব প্রচারণার বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী ও বেগবান ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। এজন্য বন্ধুরাষ্ট্রের, প্রবাসীদের ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সহযোগিতা নিতে বলা হয়েছে। বিদেশি সাংবাদিকদের এ দেশে ডেকে নিয়ে আসা এবং আমাদের কমিউনিকেশন ও লিগ্যাল স্কিল বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ-ভারত যত চুক্তি হয়েছে সেগুলো প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। রামপালসহ দেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি করা হয়েছে সেগুলো বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওপর ভারতের নিপীড়ন, সাংস্কৃতিক আধিপত্যের চেষ্টা, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টার নিন্দা জানানো হয়েছে। ভারতকে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারত বাংলাদেশ বিরোধী যেসব প্রচারণা চালাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে সব সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। সব ধরনের উসকানিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। সবাই একটা কথা বলেছেন যে, আমাদের শক্তিহীন, দুর্বল, নতজানু ভাবার কোনোরকম অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচার ও উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা সাহসী থাকব।