ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মৃত্যু
নিহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ তিন মাস পর মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্বজনরা।
আব্দুল্লাহ যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বড়আচড়া গ্রামের টার্মিনাল পাড়ার আব্দুল জব্বারের ছেলে।তিনি রাজধানীর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে আব্দুল্লাহ সবার ছোট।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক কাজী সাইফুল ইসলাম জানান, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মিত কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল উদ্বোধনের পর বিকেলে নিহত মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।
নিহত আব্দুল্লাহর বাবা বেনাপোল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রথম থেকেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তার ছেলে। গত ৪ আগস্ট বিকেলে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয় আব্দুল্লাহ। এ সময় তার মাথায় পুলিশের একটি গুলি লাগে। পরে তার সহযোগীরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিউরো সার্জারি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল্লাহ গত তিন মাস সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখানে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান জব্বার।
আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া বেগম বলেন, আব্দুল্লাহর স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে বড় হয়ে একটা সরকারি চাকরি করবে। বাবা-মার দুঃখ কষ্ট লাঘব করে তাদের মুখে হাসি ফোটাবে। তার সে স্বপ্ন পূরণ হল না। পুলিশের গুলিতে সব শেষ হয়ে গেল।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিহত আব্দুল্লাহর মরদেহ বেনাপোল এসে পৌঁছায়নি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গভীর রাতে বা ভোর রাতের দিকে লাশ বেনাপোল পৌঁছাবে এবং আগামীকাল শুক্রবার তার দাফন করা হবে।