কেসিসি নির্বাচন: মেয়র পদে ৭, কাউন্সিলর প্রার্থী ১৮৮
শেষ হলো খুলনা সিটি করপোরেশন নিবার্চনে (কেসিসি) অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়। মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোট ১৯৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টায় নূরনগর নির্বাচন অফিস কার্যালয়ে কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের কাছে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেসিসি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক, সদস্য সচিব ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী এবং নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মাহাবুব আলম সোহাগ।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এই নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করে তাদের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই করা উচিত ছিল। মেয়র পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের কাউকেই আমি দুর্বল প্রার্থী মনে করছি না।
তিনি আরও বলেন, নগরবাসী আবার আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। কারণ বিগত মেয়াদে খুলনা সিটিতে তিনি অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন বলে জানান আব্দুল খালেক।
এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক, আগুয়ান-৭১ এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী এবং জাকের পার্টি নেতা এস এম সাব্বির হোসেন। এর আগে মেয়র পদে আরও তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী জেলা শাখার সভাপতি মো. শফিকুল আলম মধু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল আওয়াল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কামরুল ইসলাম।
অপরদিকে মনোনয়পত্র জমা দিতে আসা কাউন্সিলর প্রার্থীরা জানান, এখন পর্যন্ত একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য পরিবেশগত সব ব্যবস্থা রয়েছে। ভোটাররাও অধিক আগ্রহে আছেন ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য। তবে এক প্রার্থী যেন অপর প্রার্থীর প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি না করে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার পারামর্শ দিয়েছেন অনেকে।
কেসিসি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারাজী বেনজির আহমেদ বলেন, মেয়র পদে ৭ জন ছাড়াও, সাধারণ কাউন্সিলর পদে শেষ পর্যন্ত ১৪৯ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানান, মেয়র পদে শুধুমাত্র জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা আব্দুল গফফার বিশ্বাস মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেননি। আগের দিন পর্যন্ত মেয়র পদে ৮, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।
নিবার্চন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে কেসিসি নির্বাচন। আর ১৮ মে মনোনয়নপত্র বাছাই, ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ২৬ মে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এবারের নির্বাচনে নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ৩১ জন কাউন্সিলর ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১০ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী হবেন।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হননি মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিগত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফফার বিশ্বাস।
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, দলের নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এ ছাড়া তাকে প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আবদুল গফফার বিশ্বাস প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ তাকে সিটি নির্বাচনে অংশ না নিতে অনুরোধ করেছেন।
এসজি