ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’: সাতক্ষীরায় ব্যাপক প্রস্তুতি, প্রস্তুত ৮৮৭ আশ্রয় কেন্দ্র
সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা না থাকলেও ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য জেলার ৮৮৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৭১৮ স্কুল-কলেজকে বিকল্প আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এ ছাড়াও ৪১৬ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ নগদ টাকা ও ৫ হাজার সিপিপি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তা ছাড়াও সাতক্ষীরা উপকূলের আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জে বেড়িবাধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারসহ পযাপ্ত জিও বালুর বস্তা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইতিমধ্যে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা ও ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলো জরুরি সভা করেছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ঝড়ের পূর্বেই সংকেত অনুযায়ী মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিকেল টিম প্রস্তুতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুদ রাখা, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও শ্যামনগর উপজেলায় ২ হাজার ৯৮০ জন এবং আশাশুনি উপজেলায় ১ হাজার ২০ জন সিপিপি সদস্য এবং রেডক্রিসেন্ট ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার পূর্বে প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, শিশু ও গর্ভবতী নারীসহ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর এবং শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে উদ্ধারকারী নৌযান হিসেবে স্পিডবোট, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইঞ্জিনচালিত নৌকা/ট্রলার এবং স্থলযান প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও সকল উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স টিমের সদস্যদের ঝড়ের পরে রাস্তায় গাছ পড়লে তা অপসারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কর্মী বাহিনীসহ প্রস্তুত রাখতে হবে বলা হয়েছে। তা ছাড়াও কলারোয়া, তালা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা হতে যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় জনবল শ্যামনগর উপজেলায় সাময়িকভাবে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ