বাবার লাশ দাফন করে পরীক্ষা দিল জান্নাতি
আমড়া গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে ভাতিজা হোসাইন শেখের লাঠির আঘাতে নিহত হন চাচা ইউনুস আলী শেখ (৪১)। বাবার লাশ দাফন করে রবিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় মেয়ে জান্নাতি আক্তার। নিহত বাবার শোক নিয়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়েছে তাকে।
জান্নাতি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্ণী চরপাড়া গ্রামের নিহত ইউনুস আলী শেখের মেয়ে ও চিতলমারী আলিয়া মাদ্রাসার হয়ে এ বছরের দাখিল পরীক্ষার্থী। মেয়েকে ঘিরে কৃষক বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু স্বপ্নপূরণের আগেই তাকে বিদায় নিতে হলো। পরীক্ষা শেষে জান্নাতি জানায়, প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষা তার ভালো হয়েছে।
গত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমড়া গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে ভাতিজা হোসাইন শেখের হাতে চাচা ইউনুস আলী শেখ নিহত হন। এ ঘটনায় চিতলমারী থানা পুলিশ হোসাইন শেখ ও তার মা বেবিয়া বেগম ওরফে বেবিকে আটক করে। শুক্রবার রাতে নিহতের ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হোসাইন শেখ ও বেবিয়া বেগমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে মা ও ছেলেকে আদালতে পাঠানো হয় এবং নিহতের মরদেহ বাগেরহাট হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। বাবার মৃত্যু শোক নিয়ে রবিবার পরীক্ষা দিতে হলো জান্নাতিকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চিতলমারী আলিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. ইদ্রিসুর রহমান জানান, ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করছে তাদের মধ্যে জান্নাতি আক্তার সবার সেরা। সে ভালো রেজাল্ট নিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে বলে আশা করছি। বাবার মৃত্যুর শোক নিয়ে আজ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জান্নাতি। তিনি জান্নাতির জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। হত্যার অভিযোগে পুলিশ মা ও ছেলেকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এসজি