চুয়াডাঙ্গায় দাবদাহ বাড়ছেই, আজ ৪১.৭ ডিগ্রি
চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৩ দিন ধরে তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এ জেলায় বইছে তীব্র দাবদাহ। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বেলা তিনটায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। আবহাওয়া অফিস বলছে, সহজে দেখা মিলছে না বৃষ্টির। এদিকে তীব্র খরায় ঝরে যাচ্ছে আম-লিচুর গুটি। বোরো ধান, সবজি খেতে প্রতিদিন সেচ দিতে হচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বাড়তি দামে প্রতিদিন ডিজেল কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস ছুটে যাচ্ছে তাদের।
চাষী মঙ্গল মিয়া। ২ বিঘা ধান, ১ বিঘা মিষ্টি কুমড়া, ১০ কাঠা করলা আর ১ বিঘা জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন। গত ১৩ দিন ধরে তীব্র খরায় ফসলি জমিতে সেচ দিতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন তিনি। কথা হয় মঙ্গল মিয়ার সঙ্গে, দু’বেলা শ্যালো মেশিন চালাতে হচ্ছে। ডিজেলের যে দাম তাতে এবার পানি দিতে দিতে সব শেষ হয়ে যাবে। লোকসান হয়ে যাবে। আল্লাহ যদি একটু রহম করত তাহলে আমিও বাঁচতাম, মাঠের ফসলও বাঁচত।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হচ্ছে। আজ শুক্রবার এ জেলায় সকাল ৯টায় ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৯ শতাংশ। এরপর দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৬ শতাংশ। বেলা ৩টায় তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ। এভাবে গত ১৩ দিন ধরে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। দু--তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
সকালে সূর্য উঠার পরপরই তীব্র রোদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। বিশেষ করে দুপুরের পর আগুন ঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা বিরাজ করছে সূর্য একেবারে পাটে পড়ার আগ পর্যন্ত।
চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক ও কৃষকরা। তীব্র রোদে মাঠে টিকতে পারছেন না কৃষক ও দিনমজুর।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ছিল ৪১ ডিগ্রি, বুধবার ছিল ৩৯.৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার জেলায় সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি, রবিবার তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি, শনিবার ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭.৫ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫.৫ ডিগ্রি, রবিবার ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।
এসজি