ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন

যশোর মেডিকেল কলেজের (যমেক) ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেনকে পিটিয়ে হাত ও দুই পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় পাঁচ সদস্যের কমিটি। তাদের তদন্তে অভিযুক্তদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। অভিযুক্তরা ছাত্রাবাসে আধিপত্য বিস্তারের জন্য এ ধরনের হামলা ঘটিয়েছে বলে সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মহিদুর রহমান। তিনি জানান, তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সুপারের কাছে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করেছেন, এটি এখন আদালতে বিচারাধীন। তাই আমরা আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে আছি।
কলেজ অধ্যক্ষ আরও জানান, আজ কলেজের মিটিংয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত হতে পারে। দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তরা সাময়িক বহিস্কার ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ইন্টার্ন কোর্সের সনদ বাতিল করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জানুয়ারি যমেক ইন্টার্ন চিকিৎসক জাকির হোসেনকে ১০৫ নম্বর কক্ষে পিটিয়ে তার হাত ও দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। ঘটনার পর আহতের ভাই যশোর কোতওয়ালী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় ঘটনার ৯ দিন পর ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করা হয়।
মামলায় ৭ জন মেডিকেল ছাত্র ও ইন্টার্ন ডাক্তারকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন-যশোর মেডিকেল কলেজের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র শামীম হোসেন, ৫ম ব্যাচের ছাত্র আবদুর রহমান আকাশ, ষষ্ঠ ব্যাচের ছাত্র মেহেদী হাসান লিয়ন, ৭ম ব্যাচের ছাত্র রাসেল, ৯ম ব্যাচের ছাত্র শাকিব আহমেদ তনিম,সৌম্য সাহা ও ১০ম ব্যাচের ছাত্র তন্ময় সরকার।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা প্রায় জাকির হোসেনের পাশের রুমে মাদক সেবন ও হৈ-চৈ করত। এতে পড়াশুনার অসুবিধা হওয়ায় জাকির হোসেন হৈ-চৈ করতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত পৌনে ৯টার দিকে জাকির হোসেনের রুমে এসে রাসেলের নির্দেশে অন্যরা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে জাকির হোসেনের হাত-পা ভেঙে দেয়। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, কাগজপত্র ও চাবি নিয়ে যায়। জাকিরের চিৎকারে আশপাশের রুমের আবাসিক ছাত্ররা এসে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনার পর মেডিকেল কলেজ প্রশাসন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুর কুতুবুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত করে ১২ দিন পর প্রতিবেদন জমা দেন। কমিটির দাবি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এত সময় লেগেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার সর্তে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য বলেন, তদন্তে অভিযুক্তদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মূলত অভিযুক্তরা ছাত্রাবাসে আধিপত্য বিস্তারের জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে ।
এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মামলাটি তদন্তাধীন রয়ছে।
এসআইএইচ
