২ দিনেও নেভেনি ইপিজেডের আগুন, ক্ষতি ১৫০ কোটি টাকা

দুই দিনেও পুরোপুরি নেভেনি মোংলা ইপিজেডের মধ্যে লাগা ভিআইপি কারখানার আগুন। কারখানার ভিতরে কালো ধোয়া বের হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ। এদিকে ভারতীয় কোম্পনি ভিআইপির লাগেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্মকর্তারা।
ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের হেড অব এইচ আর মো. মিজানুর রহমান খাঁন বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে তাদের মোংলা ইপিজেডে ৯টি কারখানার মধ্যে ১ নম্বর কারখানাটিতে সর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের মোংলা, বাগেরহাট ও রামপালের ৮টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ততক্ষণে কারখানাটি পুড়ে যায়। এ সময় কারখানাটিতে থাকা লাগেজ তৈরির কাঁচামালসহ তৈরি লাগেজ ছিল। যা বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্রে রপ্তানির অপেক্ষায় ছিল। এ ছাড়াও এ কারখানায় রাসায়নিক আঠা,পলিথিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজ যন্ত্রপাতিও সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়ে মোট ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোংলা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, পৃথিবীর একমাত্র বড় (এক লাখ ১১ হাজার বর্গফুট) এই লাগেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় তাদের কর্মরত ৭০০ শ্রমিক নিরাপদে দ্রুত বেরিয়ে এসেছে। এ জন্য কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে এই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা জানান, ফ্যাক্টরির মধ্যে ওয়েলডিংয়ের কাজ হচ্ছিল। ওই সময় ওয়েলডিংয়ের আগুন থেকে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের মোংলা বন্দর ইউনিটের সিনিয়র ষ্টেশন কর্মকর্তা মো. আরবেশ আলী বলেন, ‘ভিআইপি কারখানায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও ভিতর থেকে এখনও ধোয়া বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখনো পুরোপুরি নেভেনি। তারপরও মোংলা বন্দর, রামপাল খুলনা ও বাগেরহাটের ৮টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে।’
এ ব্যাপারে মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, ‘ইপিজেডের ভেতরে ভিআইপির ১ নম্বর কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও আগুন পুরোপুরি নেভেনি। কারখানাটিতে আগুন লেগে ভিআইপির অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ইপিজেডের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (হিসাব) আবুল হাসান মুন্সিকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। এরপর ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।’
এদিকে মোংলা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানি ভিআইপি ইন্ডাষ্ট্রি বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিডেট এখানে বিনিয়োগ শুরু করে। শুরুতে তারা ছয়টি কারখানা দিয়ে পণ্য উৎপাদনে যায়। পরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এখানে তাদের ৯টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ব্যাগ এন্ড লাগেজ তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বিশ্বের সব দেশে উৎপাদিত লাগেজ রপ্তানি করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মোংলা ইপিজেডের একটি সুতার কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল।
