বিজিবির মানবিকতায় দেশে ফিরলেন বৃদ্ধা জমেলা

ভাই বাস করে বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলায়। অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল বৃদ্ধা জমেলা বেওয়া (৭৮)। তিন মাস ভাইয়ের বাড়িতে থাকার পর আবার একইপথে নিজ দেশে ফিরছিল। এ সময় সীমান্তে বিজিবির টহল দলের হাতে ধরা পড়েন।
ভাই মারা গেছে। ভাইয়ের একটা ছেলে আছে পাগলা। ওদের দেখার জন্য আমিও পাগল হয়ে গেছি। ভাইয়ের বাড়িতে কিভাবে এসেছি বলতে পারবো না। বাপ গো এখন দেশে ফিরে যাবো। মুন্সিপুর সীমান্তে উপস্থিত সাংবাদিকদের এভাবেই কথাগুলো বলছিল বৃদ্ধা জমিলা বেওয়া।
জমিলা বেওয়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ধুবুলিয়া থানার পাথরাদহ গ্রামের মৃত ফজলুর স্ত্রী। বৃদ্ধা ও বাধ্যর্কজনিত হওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সবধরনের উদ্যোগ নেয় বিজিবি। এরপর ২৫ জানুয়ারি বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে বিএসএফর হাতে হস্তান্তর করে।
তিন মাস আগে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলার কাশিয়ারি পাড়ায় ভাই মৃত রহিম বকশের বাড়িতে এসেছিল জমিলা বেওয়া (৭৮)। এরপর ২২ জানুয়ারি বিকেলে নিজ বাড়িতে ফিরে যাবার উদ্দেশ্যে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্তের ৯৩ নং মেইন পিলারের কাছে ঘুরাঘুরি করতে থাকে। এ সময় মুন্সিপুর ক্যাম্পের বিজিবি টহলদলের হাতে ধরা পড়ে।
এ সময় জমেলা বেওয়া বিজিবিকে জানায়, বাংলাদেশে বসবাসকারী ভাইয়ের বাড়িতে ৩ মাস আগে বেড়াতে এসেছিল এখন নিজ বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু সীমান্ত পেরিয়ে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করতে চাইলে ৮২ বিএসএফ এর মহাখোলা ক্যাম্পের বিএসএফ তাকে ভারতে প্রবেশে বাধা প্রদান করে।
চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর পরিচালক লে.কর্নেল শাহ মোঃ ইশতিয়াক জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলেন বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের সঙ্গে। কথোপকথনের মাধ্যামে বিজিবির পক্ষ থেকে তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আহবান করা হয়। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সীমান্তে এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে বিজিবি।
তিনি আরও জানান, এরপর বিজিবি যশোর রিজিয়ন এর নোডাল অফিসার লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাযহার কতৃক বিএসএফ এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার নোডাল অফিসার ডিআইজি শ্রী অমিরেশ কুমার আরিয়াকে বিজিবি কর্তৃক আটককৃত বৃদ্ধ মহিলাকে ফেরত নেওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হয়। পরবর্তীতে তারা পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিক জমিলাকে গ্রহণ করা হবে জানায়। বিজিবি-বিএসএফের এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।
এএজেড
