এসএসসি উত্তীর্ণ ১০ হাজার এখনও হতে পারেনি ভর্তি!

যশোর শিক্ষাবোর্ডের ১০৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েও এইচএসসিতে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। ফলে চরম হতাশায় রয়েছে মেধাবী এসব শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে এসএসসিতে উত্তীর্ণ ১০ হাজার শিক্ষার্থী কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারেনি এখনও। নম্বরের তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের বিষয়টি চিন্তা করে আগামী মাসে সর্বশেষ ভর্তির সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে শিক্ষাবোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান।
কলেজ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা যেসব কলেজে ভর্তির আবেদন করেছিল সেসব কলেজ অপেক্ষাকৃত উন্নত। ভালো মানের কলেজে বেশি সংখ্যক আবেদন পড়ায় যাদের বেশি নম্বর ছিল তারাই ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।জিপিএ-৫ পাওয়ার পরও ১০৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তিও সুযোগ পায়নি।
জিপিও ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের বাইরেও ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেও কোনো কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। উপায় না পেয়ে কিছু শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি হয়েছেন। আর কিছু শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে সুযোগ না পাওয়ায় ভর্তি হয়নি বলে জানান বোর্ড কর্মকর্তারা।
অথচ ভালো মানের অনেক কলেজে আসন ফাঁকা রয়েছে এখনও। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আন্তঃ শিক্ষাবোর্ড আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে আরও এক দফা ভর্তির আবেদন গ্রহণ করার চিন্তা করছেন এমনটি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শেষ ধাপের ভর্তির আবেদন গ্রহণ করার সুযোগ। যারা এখনো পর্যন্ত ভর্তি হতে পারেনি তারা সর্বশেষ ধাপে ভর্তি হতে পারবেন বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে আবেদনকারীদের সতর্ক হতে বলেছেন কলেজ বিভাগের কর্মকর্তারা। সতর্কতার অংশ হিসেবে চয়েজে পাঁচটির পরিবর্তে ১০ টি কলেজের নাম দেওয়া, আগে যেসব কলেজ চয়েজ দিয়েছিল সেগুলো এড়িয়ে যাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আবেদন করতে বলা হচ্ছে। যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৩ জন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০১ জন পরীক্ষা দেয়।
পাস করে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩১৪ জন। ওই বছর যশোর শিক্ষাবোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পায় ৩০ হাজার ৮৯২ জন পরীক্ষার্থী। পাসের হার ছিল ৯৫.১৭ শতাংশ। পাস করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২০ হাজার ৩০১ জন ছেলে ও ১৭ হাজার ৪৬৭ জন মেয়ে, মানবিক বিভাগে ছেলে ৪৮ হাজার ৮৫ ও মেয়ে ৫৩ হাজার ৬২৭ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১২ হাজার ৪৭২ ছেলে ও ৯ হাজার ৩৬২ জন মেয়ে ছিল।
এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পায় ৩০ হাজার ৮৯২ জন। এরমধ্যে ছেলে ১৩ হাজার ৬১৭ ও মেয়ে ১৭ হাজার ২৭৫ জন ছিল। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১১ হাজার ৭৭৭ জন ছেলে ও ১১ হাজার ৯২৪ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৮৬২ জন ছেলে ও ৩ হাজার ৭০৩ জন মেয়ে এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৯৭৮ জন ছেলে ও ১ হাজার ৬৪৮ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পায়।
এছাড়া, জিপিএ-৪ থেকে ৫ এর নীচে পায় ৫৪ হাজার ৭৫০, জিপিএ-৩.৫ থেকে ৪ এর নীচে পায় ৩২ হাজার ৫৯০, জিপিএ-৩ থেকে ৩.৫ এর নীচে পায় ২৫ হাজার ১৩০, জিপিএ-২ থেকে ৩ এর নীচে পায় ১৭ হাজার ১৫৭ এবং জিপিএ-১ থেকে ২ এর নীচে পায় ৭৯৫ জন। যশোর শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানী জানান, কলেজে আসনের তেমন কোনো সংকট নেই। নাম্বার কম পাওয়ায় জিপিএ-৫ পেয়েও কাংক্ষিত কলেজে ভর্তি হতে পারেনি বেশীরভাগ শিক্ষার্থীরা।
এএজেড
