মোংলায় সার বোঝাই জাহাজডুবি

মোংলা বন্দরের বহিনোঙর এলাকায় সার বোঝাই এমভি শাহজালাল এক্সপ্রেস নামক একটি লাইটার জাহাজ ডুবে গেছে। এ সময় জাহাজটির ৮ কর্মচারী সাতরিয়ে পাশের লাইটারে উঠতে সক্ষম হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের একটি অভিযানিক দল। এ ঘটনায় মোংলা বন্দর কতৃপক্ষ বলেছে, বন্দরের চ্যানেল নিরাপদ রয়েছে এবং জাহাজ চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
জানা যায়,বন্দরের হাড়বাড়িয়া-৯ এ অবস্থানরত লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী সারের জাহাজ এম ভি ভিটা অলম্পিক নামক জাহাজ থেকে সার বোঝাই করে এমভি শাহজালাল এক্সপ্রেস নামক লাইটারটি। এরপর মঙ্গলবার(২৪ জানুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে লাইটার জাহাজটি পণ্য খালাসের জন্য যশোরের নোয়াপাড়ার উদ্দ্যেশে রওয়ানা দেয়। মোংলা বন্দরের বহিনোঙ্গর হাড়বাড়িয়া-৮ এলাকায় এসে পৌঁছালে লাইটারের প্রোপেলারসেভ ভেঙে ঈঞ্জিন রুমে পানি ঢুকতে থাকে। এ সময় লাইটারের ৮ কর্মচারী পাশে থাকা অন্য লাইটারে সাতরিয়ে আশ্রয় নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে লাইটারটি ডুবে যায়।
এ বিষয়ে বিদেশি জাহাজ এম ভি ভিটা অলিম্পিক জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট পার্ক শিপিংয়ের খুলনার ম্যানেজার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ডুবে যাওয়া জাহাজের সাতজন ষ্টাফ ও একজন নিরাপত্তা কর্মী পাশে থাকা এম ভি নয়ন শয়ন ও মাহমুদ রায়হান নামক কার্গো জাহাজে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার ৯ নম্বর এ্যাংকোরেজে থাকা বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি ভিটা অলিম্পিক থেকে প্রায় ৫০০ মেট্টিক টন সার (এমওপি) বোঝাই করে কার্গো জাহাজ এম ভি শাহজালাল এক্সপ্রেস খুলনার শিরোমনির উদ্দেশে ছেড়ে আসে। পথিমধ্যে অন্ধকার ও ঘন কুয়াশার কারণে ৮ নম্বর এ্যাংকোরেজে থাকা বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি সুপ্রীম ভেলরের পেছনে ধাক্কা লাগে। এতে কার্গোটি ডুবে যায়।
ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ আরও বলেন, ৫০০ মেট্টিক টন সার নিয়ে কার্গো জাহাজ এম ভি শাহজালাল এক্সপ্রেস মূল চ্যানেলে ডুবে গেলেও বর্তমানে ওই চ্যানেল দিয়ে অন্য নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। বুধবার সকালে দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে রেড মার্কিং করার জন্য হারবার বিভাগের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। ডুবে যাওয়া কার্গোটির ফিটনেস সার্টিফিকেট রয়েছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদর দপ্তরের গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কমান্ডার মাহামুদ জানান, তাদের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন । বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি তাদের সহযোগিতা চায় তারা এগিয়ে আসবেন।
এদিকে একের পর এক জাহাজডুবির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, পশুর চ্যানেলে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে সার বোঝাই নৌযান ডুবিতে প্রথমত ক্ষতির আশঙ্কা হলো সার জলজপ্রাণীর কোনো খাবার নয়। এতে জলজপ্রাণীর ক্ষতি হতে পারে। অপরদিকে বিভিন্ন সময়ে ডুবন্ত নৌযান উত্তোলনে বিলম্ব হওয়ায় চ্যানেলে পলি পড়ে নাব্যতা সংকটের ঝুঁকি বাড়ছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি ৩১ হাজার ৪৫৯ মেট্রিক টন সার নিয়ে মোংলা বন্দরের বহিনোঙ্গর সুন্দরি কোঠায় আসে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী বানিজ্যিক জাহাজ এম ভি ভিটা অলম্পিক । এর পর মঙ্গলবার ওই জাহাজটিকে বন্দরের বহিনোঙ্গর হাড়বাড়িয়া-৯ এ স্থানান্তর করা হয়।
এসআইএইচ
