আউশ ধান চাষ নিয়ে বিপাকে মাগুরার কৃষকরা

মাগুরায় ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকের আউশ ধানের চারা নষ্ট হচ্ছে। গত সপ্তাহ ধরে অব্যাহত ভাবে ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা শিশির জমে পানি জমে নষ্ট হচ্ছে। ফলে চারা লালচে ভাব হয়ে মরে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে আউশ ধান রোপনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে চাষীরা। ইতিমধ্যে মাগুরা সদরের বিভিন্ন গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা আগাম জাতের আউশ ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন এলাকায় চাষীরা ধানের চারা রোপন শেষ করেছেন।
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার বরিশাট গ্রামের ধানচাষী আব্দুল হাকিম মোল্যা জানান, আমি এবার ৪ একর জমিতে ধানের আবাদ করবো। ইতিমধ্যে ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। এবার আউশ ধানের জন্য ৫০ কেজি পাতো দিয়ে বীজতলা প্রস্তুত করেছি। গত অগ্রহায়ন মাসে এ ধানের পাতো দেওয়া হয়। ধানের পাতো দেওয়ার মাসখানেক পর চারা একটু বড় হলে যত্ন নিতে শুরু করি। কিন্তু বর্তমানে অব্যাহত ভাবে ঘন কুয়াশার কারণে চারা লালচে হয়ে করে যাচ্ছে।
অধিকাংশ চারায় এ ধরণের ক্ষতি হওয়ায় ধান চাষ নিয়ে আমি বিপাকে আছি। এ এলাকায় কৃষি অফিসের কোন ব্লক সুপারভাইজার কাজ করে না। ফলে আমরা কৃষি সংক্রান্ত কোন পরামর্শ পাই না। এখন জেলার কৃষি অফিসের গিয়ে পরামর্শ নেব। ধানের ৭৫ শতাংশ চারাই এবার নষ্ট হয়ে গেছে। গত বছর এত ঘন কুয়াশা ছিল না ফলে ধানের ফসলও ভালো পেয়ে ছিলাম। এবার ধান চাষ নিয়ে আমি খুব বিপাকে আছি।
এ গ্রামের অন্যচাষী আনোরুল বলেন, এবার ঘন কুয়াশার কারণে আমার ২০ কেজি ধানের পাতো দেওয়ার বীজতলা অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমি ৩ একর জমিতে ধান চাষ করবো। অন্যবারের চেয়ে এবার শীত বেশি ও তার সঙ্গে রয়েছে ঘন কুয়াশা। বিশেষ করে গত কয়েকদিন দিনের কুয়াশা ছিল খুব বেশি। সূর্যের আলো একেবারেই ছিল না। এবার আমাদের চারার বয়স প্রায় ২ মাস। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই রয়েছে চারা। এখনই বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে আমরা ধানের জমিতে তা রোপন করি কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ চারায় লাল হয়ে গেছে ফলে এ চারা রোপন করলে আমাদের ধান ভালো হবে না। তাই ধান চাষ নিয়ে আমরা বিপাকে আছি।
সদরের ছয়চার গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, এবার ৬ বিঘা জমিতে আমি আউশ ধানের আবাদ করবো। কিন্তু ঘন কুয়াশা আর তীব্র শৈতপ্রবাহের কারণে আমার ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ধান চাষ আমি সমস্যার মধ্যে আছি। অন্য কোথাও থেকে চারা সংগ্রহ করে আমি জমিতে ধান রোপন করবো।
মাগুরা সদও উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, এবার তীব্র শীতে সদরের অনেক এলাকার কৃষকের ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে শুনেছি। আমরা কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছি। বিশেষ করে বেশি ঘন কুয়াশা হলে ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে একটু উচু করে ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কুয়াশা শেষ হয়ে গেলে পলিথিনটি উঠিয়ে দিয়ে সূর্যের আলো লাগানো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এএজেড
