নড়াইলে ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই দেখতে মানুষের ঢল

নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৮তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪ দিনব্যাপী সুলতান মেলার অষ্টম দিনে ঐতিহ্যবাহী এ ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) শহরের কুড়ির ডোব মাঠে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা উপভোগ্য এই প্রতিযোগিতায় নড়াইল, যশোর, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, খুলনাসহ সুদূর সিলেট-চট্রগ্রাম থেকে প্রায় ৭০টি ষাঁড় অংশ নেয়। লড়াইয়ে অংশ নেওয়া প্রতিটি ষাঁড়ই ছিলো বাহারি রংয়ের আকর্ষণীয় দেহের। এই লড়াই দেখতে কৌতূহুলী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ষাঁড়ের লড়াই দেখতে শিশু-কিশোর, মাহিলা, ছেলে, বুড়োসহ নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠটি।
দর্শনার্থীরা জানান, প্রতিবছরই সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। এই লড়াইয়ে অনেক ষাঁড় অংশ নেয়। সেই ষাঁড়ের লড়াই দেখতেই তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন। এ বছরের আয়োজনও অনেক চমৎকার। অনেকেরই জীবনে এটিই প্রথমবার দেখা। তবে কেউ কেউ আগেও অনেকবার ষাঁড়ের লড়াই দেখেছেন। ফলে এই লড়াই একটু ভয়ংকার হলেও ভালো লাগে তাদের। ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিযোগিতা ভবিষ্যতেও যেন আয়োজনের করা হয় সেটিই চান তারা।
দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত ষাঁড়ের মালিকরা বলেন, সুলতান মেলায় সুন্দরভাবে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়। তাই দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এবং মানুষকে আনন্দ দিতে এসেছেন তারা। লড়াইয়ে অংশ নিতে এসে অনেক সময় ষাঁড় ও মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি হয়। তবে ক্ষতির হিসাব করলে সবসময় চলে না। তাই অল্পসল্প ক্ষতির সম্ভাবনা বুঝেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তারা।
গ্রামীন ক্রীড়া আয়োজনে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে আয়োজকরা বলেন, সুলতান মেলায় বিভিন্ন গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধূলা তারা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। তার মধ্যে ষাঁড়ের লড়াই একটি। সারা বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য ষাঁড় এখানে এসেছেন। হাজার হাজার মানুষ এটি উপভোগ করছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারী নড়াইলের সুলতান মঞ্চে ১৪ দিনব্যাপী সুলতান মেলা মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলার পাশাপাশি পাশর্^বর্তী কুড়ির ডোব মাঠে কিউট গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসব শিরোনামে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। লাঠিখেলা, তৈলাক্ত কলাগাছে ওঠা দিয়ে শুরু করে পর্যায়ক্রমে ভলিবল, হ্যান্ডবল, হাড়িভাঙ্গা, ঘোড়ার গাড়ি দৌড়, কুস্তি, আরচারী ও দড়াটানা এবং সর্বশেষ ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২০ জানুয়ারি মেলা শেষ হবে।
এএজেড
