জুয়া খেলা নিয়ে রাগ করায় ফুপুকে হত্যা, ভাতিজা গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় স্কুল শিক্ষক রোকসানা খানম (৫২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাতিজা (ভাইয়ের ছেলে) নওরোজ কবির নিশাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুয়া খেলা নিয়ে বকাবকি ও রাগ করার কারণে নিশাত তার ফুপুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী রবিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রোকসানা খানম বাড়ির ছাদে গেলে সেই সময় নিশাত তার ফুপুর বাসার একটা কক্ষে ঢুকে লুকিয়ে থাকে। রাতে রোকসানা ঘুমিয়ে পড়লে আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে শিল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে ভাতিজা নিশাত। পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিলটি নিশাতের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী লিফটের জন্য নির্মাণ করা অব্যবহৃত জায়গা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত নওরোজ কবির নিশাত পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোকসানা খানমকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে পুলিশকে জানায়, অনলাইন বেটিংয়ে (জুয়া) বাধা দেওয়ার কারণে তার ফুপুকে সে ঘুমের মধ্যে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে।
কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, শিল উদ্ধারের পর মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) শিক্ষক রোকসানা খানম হত্যার ঘটনায় তার ভাইয়ের ছেলে নওরোজ কবির নিশাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় পরিবারের তিন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এরপর ওই রোকসানা খানমের ভাতিজা (ভাইয়ের ছেলে) নিশাতের মোবাইল চেক করে তার প্রতি প্রবল সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, নিশাত অনলাইন বেটিংয়ে (জুয়া) আসক্ত। এ কারণে সে তার ফুপুর কাছ থেকে মাঝেমধ্যেই টাকা নিত। এর আগে নিশাতের ফুপু রোকসানা খানম নিশাতকে একটা মোটরসাইকেল কিনে দেয়। সে ওই মোটরসাইকেল বিক্রি করে জুয়া খেলার পেছনে টাকা ব্যয় করে।
ডিবির ওসি জানান, নিশাত তার ফুপুকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে হত্যাকাণ্ডের পর বাসার বারান্দার উপরের গোল ফাঁকা জায়গা দিয়ে বের হয়ে হয় চলে যায়।
এর আগে সোমবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া হাউজিং ডি ব্লকের ২৮৫ নম্বর ৬তলা বিশিষ্ট বাড়ির দ্বিতীয় তলায় নিজ ফ্ল্যাটের শোবার ঘরের খাটের উপর থেকে রোকসানা খানমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রোকসানা খানম কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামী খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) যশোর চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি সেখানেই থাকেন। সাপ্তাহিক ছুটিতে কুষ্টিয়ায় আসেন। তাদের কোনো সন্তান নেই। এ কারণে নিজ বাড়ির দোতলায় একাই থাকতেন রোকসানা। মাঝেমধ্যে শাশুড়ি এসে তার সঙ্গে থাকতেন।
এসআইএইচ