যশোরে কিশোরদের হাতে মোটরসাইকেল, বাড়ছে দুর্ঘটনা
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
যশোরাঞ্চলের সড়কগুলো এখন মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার ভয়ংকর মৃত্যুফাঁদ। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচেছ অসংখ্য কিশোর, তরুন ও যুবকরা। বর্তমানে কিশোর ও যুবকদের কাছে বিভিন্ন ব্রান্ডের মোটরসাইকেল বেশ লোভনীয় যান। উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকরাই মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে বেশী। বাইকে চড়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব কিশোর তরুন ও যুবকরা। তাদের মোটর সাইকেলের গতি থাকে সর্বচ্চ। গতি দেখে ভয় পাচ্ছেন পথচারীরা।
দুর্ঘটনার পরিণাম জানা সত্বেও অনেক সচেতন অভিভাবকরা তাদের ১৪-১৫ বছর বয়সী কিশোর সন্তানটিকে কিনে দিচ্ছেন মোটর সাইকেল। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত কিশোররা ৩/৪ জন করে বন্ধু নিয়ে বাইক চালাচ্ছে সর্বচ্চ গতিতে। তারা দল বেঁধে বাইক প্রতিযোগিতায় মেতে উঠছে। কিশোরদের বাইক চালানো যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ১০০ কিমি বা তার অধিক গতিতে চলছে তাদের মোটর সাইকেল।
আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে কিশোরদের হাতে বাইক তুলে দেয়া। ৩/৪ জন আরোহী, অস্বাভাবিক গতি, সাবধানতার সাথে ওভারটেকিং না করা, চালানো অবস্থায় হেডফোন লাগিয়ে গান শোনা, কাঁধে কান লাগিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলা, ট্রাফিক আইন মান্য না করা, প্রশিক্ষণ না থাকা, অন্যমনস্ক হওয়া, পার্শ্বরা তা না দেখা, হাট-বাজারে গতি না কমানো, হেলমেট ব্যবহার না করা উল্লেখযোগ্য।
এসব কারণেই কিশোর-তরুণ বাইকাররা অকালে হারাচ্ছেন প্রাণ। অনেকে পংগু হচ্ছেন সারা জীবন। যশোরে সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় সচেতন মহল উদ্বিগ্ন। যশোর সরকারি এমএম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহিন বলেন, প্রতিবেশীদের সাথে পাল্লা অথবা সন্তানদের আবদার মেটাতে অভিভাবকরা মোটর সাইকেল।
অনেকে সন্তানকে ধীরে চালানোর কথা বলেন না। তরুণ-কিশোররা সুযোগ পেয়ে পাল্লা দিয়ে মোটরসাইকেল চালাচল। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় অকালে মারা যাচেছ তারা। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানান, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় মারা যাচেচন।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের অর্ধেকের বয়সই (৫১.৪২%) ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। যশোর কোতয়ালী পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ৭ অক্টোবর রাতে যশোর-বেনাপোল সড়কের নতুনহাট এলাকায় ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন কলেজ ছাত্র নিহত হয়েছেন।
যশোর সরকারি এমএম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহিন বলেন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের প্রতি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছে। যশোর কোতওয়ালী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, কিশোর তরুনরা বেপরোয়া গতিতে মোটর সাইকেল চালাচ্ছে। প্রথমে অভিভাবকদের সতর্ক হতে হবে।
তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অভিভাবকদের ভূমিকা অনেক বেশি। প্রাপ্তবয়স্ক না হলে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় ভালো। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের গবেষণায় উঠে এসেছে, মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়কে মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে অধিকাংশ চালক নিয়ম মানেন না। এক মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি না ওঠার নিয়মটিও মানা হয় না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেলও অহরহ চলে। অনেকেরই মোটরসাইকেল চালানোর কোনো প্রশিক্ষণ থাকে না।
এএজেড
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)