চিকিৎসকের ভুলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে প্রসূতি
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হাফিজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল অপারেশনে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন সোমা রানী নামে এক প্রসূতি। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ডা. শরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোমা চিকিৎসার ব্যয়ভার নিয়ে দুঃচিন্তায় তার পরিবার।
সোমা রানী কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরা গ্রামের বাসিন্দা বৈদ্য গোলদারের মেয়ে। সোমার মা চম্পা রানী বলেন, আমার মেয়ে সোমা গর্ভবতী থাকাবস্থায় কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হই। হাসপাতালে যাওয়ার আগেই দালালের খপ্পরে পড়ে হাসপাতালের সামনে হাফিজা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার ক্লিনিক ম্যানেজার রনজিৎ পাল ও ডা. দিনেশ কুমার বলেন আপনার মেয়ের যে অবস্থা এখনই সিজার করতে হবে। তাদের কথায় মেয়েকে গত ২৪ জুলাই হাফিজা ক্লিনিকে ভর্তি করি।
তিনি আরও বলেন, সেখানে সিজার করতে ১২ হাজার টাকা নেয় ওই ক্লিনিক। আর ওষুধ কিনতে লাগে আরও ১০ হাজার টাকা। গত ২৯ জুলাই সোমাকে ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে এসে সোমার অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে পড়ে। পরে আবার সোমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ওই হাফিজা ক্লিনিকে। সেখানে ক্লিনিক ম্যানেজার রনজিৎ পাল ও ডা. দিনেশ কুমার বলেন, সোমার পেট কেটে দেখতে হবে কী হয়েছে। তবে ৩ হাজার টাকা লাগবে। তখন ৩ হাজার টাকা নিয়ে সোমার পেট কাটেন তারা। সেখানেও প্রায় ১২ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এর পরেও সোমা শরীরের কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় ক্লিনিক ম্যানেজার বলেন ভালো চিকিৎসা করতে হলে সাতক্ষীরা মেডিকেলে নিয়ে যান।
চম্পা বলেন, সোমার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমরা তাকে দ্রুত সাতক্ষীরার বুশরা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। সেখানকার কর্মরত চিকিৎসক শরিফুল ইসলাম সঙ্গে সঙ্গে সোমাকে অপারেশন করেন। ডাক্তার জানান, ঠিকমতো সিজার করা না হওয়ায় পেটের মধ্যে পয়ঃনিষ্কাশনের নাড়িতে ঘা হয়ে পচন ধরেছে। বর্তমানে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাথরুম করানো হচ্ছে। পেটের ঘা শুকাতে ও সুস্থ হতে প্রায় ৩ মাস লাগবে। এতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
হাফিজা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে তারা যেতে দিল না। জোর করে নিয়ে ভর্তি করাল হাফিজা ক্লিনিকে। সেখানে ডা. আসিফ কাইসারকে দিয়ে তার মেয়েকে সিজার অপারেশন করায়। ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ে এখন মৃত্যুর পথযাত্রী। টাকার অভাবে তার চিকিৎসা ও ওষুধ কিনতে পারছি না। তারপর ৩ মাসের শিশুটির জন্য দুধও কিনতে পারছি না।
মেয়ের জীবন বাঁচাতে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারসহ হৃদয়বান মানুষের সহায়তা কামনা করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে কলারোয়ার হাফিজা ক্লিনিকের শেয়ার হোল্ডার শফি বলেন, ‘ওই রোগীকে ডা. আসিফ কাইসার সিজার করেন। সিজারের পর সমস্যা হওয়ায় পরবর্তীতের ডাক্তার আরও তিন হাজার টাকা নিয়ে আবার অপারেশন করেছিলেন। এরপরও রোগীর শারীরিক কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে রোগীর লোকজন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি না করে বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করেছেন বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ডা. আসিফ কাইসারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ভালো বলতে পারবেন।'
এ ব্যাপারে ডা. আসিফ কাইসারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এসএন
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)